ফজলে রাব্বী, মালয়েশিয়া থেকে ।।
সুন্দর সুখের স্বপ্ন দেখে কটিয়াদী উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের পালোয়ানখার হাটি গ্রামের আরিফুল হাসান পিন্টু। পিতা আব্দুস সাত্তার। চার লাখ টাকা খরচ করে তার বন্ধুর (দীপু) মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিল। মালেশিয়ায় যাওয়ার আগে সবকিছুর মাধ্যম ছিল তার এক বন্ধু। নাম তার দীপু। তার বাবার বাড়ি নিকলী উপজেলার কারপাশা ইউনিয়নের সহরমূল। সে তার মায়ের সাথে বড় হয়েছে করগাঁও থেকে।
মালয়েশিয়া যাওয়ার পরে সেই পরিচিত মুখ- বন্ধু, আর বন্ধু থাকেনি। আসলেই সে ছিল বন্ধুবেশি শত্রু, ছিল চোরাচালান চক্রের লোক। যখন আরিফুল বুঝতে পারে তখন অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছিল। দীপু দালালচক্রের সাথে যুক্ত হয়ে মানব পাচারকারী। দালাল চক্রের সাথে আঁতাত করে চক্রান্ত করে বন্ধু আরিফুলকে আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে ফেলার জন্য বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করেছিল। আর্থিক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিতে চেয়েছিল একটি পরিবারকে। নিশ্চিত করতে চেয়েছিল একটি প্রাণের ধ্বংসকে। কিন্তু আরিফুল ভাগ্যচক্রেই হোক আর বুদ্ধির জোরেই হোক বেঁচে যায়।

আরিফুল হাসান যখন বুঝতে পারেন তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়ার চক্রান্ত হচ্ছে, তখন সে টাকার মায়া করে নিজের জীবন বাজি রেখে কোম্পানি থেকে পালিয়ে যায়। কিন্তু ঘটনাচক্রে তার পাসপোর্ট রয়ে যায় দালালচক্রের হাতে। তারা জোর করেই রেখে দেয় তার পাসপোর্টসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। পরবর্তী দুই বছর কাটে তার পালিয়ে পালিয়ে। খেয়ে না খেয়ে কোনরকম লুকিয়ে লুকিয়ে কাজ করে তার দিন গুজরান হয়।
বর্তমানে তিনি মালেশিয়ায় বৈধ হয়েছেন। উপার্জন করছেন বৈধভাবে। কিন্তু বন্ধুবেশী দীপু?
বন্ধু হলেও তাদের পারিবারিক ঝামেলা ছিল। পারিবারিক কলহকে পুঁজি করে বন্ধু বেশধারী দীপু (প্রতারক চক্রের সাথে যুক্ত) আরিফুলকে নিয়ে এমনই কঠিন বিপদের মুখে ঠেলে দিতে চেয়েছিল। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় বেঁচে যায় সে, বেঁচে যায় একটি পরিবারের সুন্দর সুখের স্বপ্ন।
আরিফুলের স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, বন্ধু হয়ে এক বন্ধুকে বিদেশ নিয়ে শত্রুও শত্রুর সাথে এমন করে না। সে কি তার বন্ধু ছিল? আমরা বুঝতে পারিনি। যদি বুঝতে পারতাম তাহলে কি আর তার মাধ্যমে আমরা বিদেশ পাঠাতাম?
বাস্তব ঘটনা এমনই দাঁড়ায় যে, দালাল (অপরাধী) কখনো বন্ধু হয় না।
লেখক : মালয়েশিয়া প্রবাসী