মাহমুদ আল আজাদ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি ।।
হাটহাজারীতে রহিমা (১৭) ছদ্মনামের এক কিশোরীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার খবর পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার (৫ অক্টোবর ২০১৮) দিবাগত রাত প্রায় সাড়ে এগারটার দিকে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের আদর্শগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, শুক্রবার রাত প্রায় সাড়ে এগারটার দিকে উক্ত এলাকার জনৈক রিকশাচালকের কন্যা রহিমা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হলে আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা আজম (২৩), মাসুম (২৯) ও মনা (২২) নামের তিন বখাটে যুবক রহিমার মুখে কাপড় পেঁচিয়ে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে রহিমাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে বখাটেরা।
ধর্ষণের পর বখাটেরা ধর্ষিতাকে ঘটনা কাউকে জানালে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করার ভয় দেখিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বলে জানা যায়। এদিকে ভিকটিমের পরিবার বখাটেদের ভয়ে ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্যও ঘর থেকে বের করতে পারেনি বলে জানান। কিন্তু শনিবার ভিকটিমের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের লোকজন বখাটেদের চোখ ফাঁকি দিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাত প্রায় নয়টার দিকে ধর্ষিতাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম রহিমার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চমেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
ভিকটিমের ভাই ফাহিম (ছদ্মনাম) জানান, ঘটনার পর থেকে বখাটেদের হুমকির কারণে আমরা গৃহবন্দী হয়ে পড়ি; যার কারণে আমার বোনকে সঠিক সময়ে চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে পারিনি। শনিবার সন্ধ্যার দিকে তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেক কষ্টে আমার বোনকে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলেও অবস্থা গুরুতর হওয়ায় দারিত্বরত ডাক্তার ভিকটিমকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। বর্তমানে আমার বোন চমেক-এ চিকিৎসাধীন আছে। এ ঘটনায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত প্রায় একটার দিকে হাটহাজারী মডেল থানায় উপস্থিত হয়ে মামলা দায়ের করার জন্য পরিবারের লোকজন প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলেও জানান ভিকটিমের ভাই ফাহিম।
হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকার্তা (টিএইচও) ডাঃ আবু সৈয়দ মো. ইমতিয়াজ হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
হাটহাজারী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শামীম শেখ সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে এলে মামলা হবে।
অপরদিকে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় হাটহাজারী পৌরসভার ফটিকা শাহজালাল পাড়ার একটি ভবনে তুহিন নামের এক স্কুলছাত্রীকে একই ভবনের চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া শাহনেওয়াজ মুন্না নামের এক বখাটে তার বাসায় নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে ড্রয়িং রুমের সোফার নিচে লুকিয়ে রাখে। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই হত্যা মামলা করলে মূল আসামি মুন্নাকে আটক করা হয়। তবে এখনো পর্যন্ত মামলার অপর ২ আসামিকে আটক করা যায়নি বলে সূত্রে জানা গেছে।