বন্ধ্যাত্বের কারণ ও চিকিৎসায় করণীয়

আমাদের সমাজে বিবাহিত জীবনে মহিলারা সন্তান ধারণে অক্ষম হলে তাকে বন্ধ্যাত্ব বলা হয়। কিন্তু বন্ধ্যাত্ব স্বামী বা স্ত্রী উভয়ের কারণেই হতে পারে।

স্বামীর কারণে বন্ধ্যাত্ব
– স্বামীর বীর্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শুক্রাণু না থাকলে
– মৃত শুক্রাণু বা শুক্রাণুবিহীন বীর্যের কারণে
– একটি অণ্ডকোষ, লুপ্তপ্রায় অণ্ডকোষ, অণ্ডকোষ জন্মগতভাবে না থাকলে
– অণ্ডকোষের প্রদাহ, মামস বা গলাফুলা রোগের প্রদাহের কারণে
– অণ্ডকোষের শিরার স্ফীতাবস্থা
– বিকৃত শুক্রাণু থাকলে
– যৌনক্রিয়ায় অক্ষম হলে
– শুক্রাণু বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় তাপ অণ্ডকোষে রক্ষা না হলে
– যৌনাঙ্গে যক্ষ্মা, গনোরিয়া প্রভৃতি রোগ থাকলে।

স্ত্রীর কারণে বন্ধ্যাত্ব
– যদি জরায়ুর আকৃতিগত কোনও সমস্যা হয়
– ডিম্বাশয় যদি সঠিকভাবে কাজ না করে
– ঋতুস্রাবের সমস্যা থাকলে
– তলপেটের প্রদাহ হলে
– বংশগত
– জরায়ুর টিউমার হলে
– থাইরয়েড এবং লিভারের কোনও জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী রোগ থাকলে
– ডিম্বাশয়ের টিউমার থাকলে
– প্রজনন অঙ্গে যক্ষ্মা, গনোরিয়া ইত্যাদি রোগ হলে।

রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষা (Diagnosis)
বন্ধ্যাত্বের কারণ নির্ণয়ে প্রথমে স্বামীর বীর্য পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং স্বামীর শারীরিক পরীক্ষা করে দেখতে হবে যদি কোনও অসুবিধা ধরা না পড়ে তখন স্ত্রীকে পরীক্ষা করতে হবে। স্ত্রীর পরীক্ষাগুলো ব্যয়বহুল বিধায় প্রথমে স্বামীকে পরীক্ষা করা উচিত। এসব পরীক্ষা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে হতে হবে। তাই রোগীকে প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা হাসপাতালে যেতে হবে।

চিকিৎসা (Treatment)
– যদি কোনও দম্পতির একবারেই সন্তান না হয় অথবা প্রথম সন্তান হওয়ার পর দ্বিতীয় সন্তান কাঙ্ক্ষিত সময়ে না হয় তবে তাদেরকে নিম্নলিখিত উপদেশগুলো দেয়া উচিত-
– স্বামী ও স্ত্রীকে আশ্বস্ত করে দুশ্চিন্তা কমাতে হবে (সব ঠিক থাকার পরেও শতকরা ২০ ভাগ দম্পতির ১ বছরে বাচ্চা নাও হতে পারে, শতকরা ১০ ভাগ দম্পতির ২ বছরে বাচ্চা নাও হতে পারে)।
– প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো মাসিকের হিসাব থেকে ডিম্বাণু নিষেকের অধিক সম্ভাবনাময় দিনগুলো চিহ্নিত করে সেই সময় সহবাস করতে হবে।
– স্বামী অথবা স্ত্রীর কোনও জটিল রোগ বা যৌন রোগ থাকলে তার চিকিত্‌সা করাতে হবে।
– স্বামী এবং স্ত্রীকে ধূমপান, মদ্যপান, যে কোন নেশা গ্রহণ, একনাগাড়ে দীর্ঘদিন এন্টিহিস্টামিন খাওয়া বর্জন করতে হবে।
– শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে। এর পরেও যদি কোনও ফল পাওয়া না যায় তবে প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সংগৃহীত

Similar Posts

error: Content is protected !!