কনস্টেবল নিয়োগে “দালাল”দের বিরুদ্ধে কঠোর কিশোরগঞ্জের এসপি

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

টাকা ছাড়া চাকরি হয় না- বিষয়টি যেন অনেকটা সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়েছে। চাকরি নামের সোনার হরিণের দেখা পেতে সহায়-সম্পত্তি বিক্রি করে, কিংবা চড়া সুদে ঋণ নিয়ে অনেকেই দালাল কিংবা প্রভাবশালীদের পেছনে ঘোরেন। প্রতারিতও হন। আর টাকা ছাড়া পুলিশে চাকরি- যেনো ভাবাই যায় না।

প্রতিবার পুলিশের নিয়োগের আগে শুরু হয় মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে “চাকরিদাতাদের” হাকডাক। তবে এবার পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগে হার্ডলাইনে পুলিশ প্রশাসন। বিশেষ করে একজন সৎ ও সাহসী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) স্বচ্ছ ও ঘুষমুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। প্রার্থীরা যেনো কোনো অবস্থাতেই প্রতারণার শিকার না হন সেজন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার বলেন, এ জেলার বাসিন্দারা মাত্র ১০০ টাকা খরচ করে যোগ্যতার ভিত্তিতে পুলিশে নিয়োগ পাবেন। বাড়তি কোনো প্রকার লেনদেন ছাড়াই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়া হবে।

আগামী ২৯ জুন কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি উপজেলায় ১৫৩টি পদে রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। তাদের মধ্যে ৯০ জন পুরুষ ও ৬৩ জন নারী। জানা গেছে, ২৯ জুন প্রার্থীদের শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষা, ৩০ জুন লিখিত পরীক্ষা এবং ৩ জুলাই লিখিত পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা এবং সেদিনই মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ৪ জুলাই মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

কনস্টেবল নিয়োগকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দালাল ও প্রতারক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রী-এমপি এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে চাকরি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে প্রার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের পায়তারা করছে।

এ অবস্থায় পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে জেলার প্রতিটি উপজেলায় মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে। মাইকিং-লিফলেটে প্রতারকদের কাছ থেকে সাবধান থাকতে বলা হচ্ছে।

পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, “আগামী ২৯ জুন তারিখে পুলিশ লাইন্স কিশোরগঞ্জ মাঠে যোগ্য প্রার্থীদের কনস্টেবল পদে নিয়োগ করা হবে। বিজ্ঞপ্তির শর্তানুসারে সব কিছু সঠিক থাকলে বিনা টাকায় স্বচ্ছতার ভিত্তিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীরাই নিয়োগ পাবেন। নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ১০০/- (একশত টাকা) ট্রেজারি চালানের অতিরিক্ত কোনো টাকা কাউকে দেয়ার প্রয়োজন নেই।”

তিনি জানান, কনস্টেবল নিয়োগের ক্ষেত্রে কেউ যেন টাকা কিংবা প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে চাকরি পাওয়ার নামে প্রতারিত না হন সেই লক্ষ্যে প্রার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

সূত্র : জাগো নিউজ

Similar Posts

error: Content is protected !!