সময়ের অপেক্ষায়


হৃদিতা ধর ।।

মাঝে মাঝে মনটাকে সাত পাঁচ বুঝিয়ে মানিয়ে নেই। আর মাঝে মাঝে মনে হয় কেন তেলাপোকা হয়ে জন্ম নিলাম!! হাতির মতো একদিন অথবা সিংহের মতো ১২ ঘণ্টা বাঁচলেও দোষের কিছু ছিল না। এমন একটা জীবনের কী এমন মহত্ত্ই বা আছে যে, দিনের পর দিন অন্ধের মতো হাতড়ে আর খোঁড়ার মতো হিঁচড়ে হিঁচড়ে চলতে হবে!

খুব ইচ্ছে করে মস্তিষ্কটাকে নজরুল করে তুলি। দরকার নাই এই বিকৃত মস্তিষ্ক; চাইও না।

যখন এই ২০ বছরের চির উন্নত মস্তিষ্ক বার বার ছেঁড়া গামছা আর ভাঙ্গা কুলার নিকট ছোট হতে দিই তখন বাঁচার কোন সাধ পাই না এই নিমকহারাম পৃথিবীতে। মনটা ভারি সাধ উঠায়, নজরুল হয়ে জেলে যেতে নয়তো ক্ষুদিরাম হয়ে ফাঁসিতে ঝুলতে! ওইটাই বরঞ্চ আরো উৎকৃষ্ট হতো, আরো মঙ্গলজনক ছিল!

কখনো কখনো সময়ের দৌরাত্ম্য খুব তোড়জোড় শুরু করে। “সময় এখন বর্ষাকাল, হরিণ কামড়ায় বাঘের গাল” না হয় এতটা পা চাটা অভ্যাস কোন জন্মেই সৃষ্টিকর্তা দেয় নি। সময় অনেকটা অভিশাপ হয়ে দাড়িয়েছে দু’চোখে।

পরিস্থিতি যে নিজেকে দুর্নীতিবাজ করে তুলছে তা বোঝার আর বাকি নেই কিয়দংশ। হয়তো আমিও একসময় বড় দুর্নীতিবাজ হয়ে যাব। তখন প্রতিটা কথার আড়ালে থাকবে দুর্নীতি। চলার ভাঁজে ভাঁজে থাকবে দুর্নীতি। গায়ের সুগন্ধির সাথেও থাকবে দুর্নীতির গন্ধ। তাতে আমার নিষ্পাপ আত্মার কোন অবদান নেই। একটা নিষ্পাপ শিশু কীভাবে সন্ত্রাসী হয় তা কি কখনো ভাবি আমরা?

কখনোই ভাবি না। তার পুরোটা দায় পড়ে পারিপার্শ্বিকতার ওপর। যখন মা-বাবা ছোট ছোট শিশুসুলভ ত্রুটিগুলো প্রশ্রয় দেন; তখন শিশুটিরও সুযোগ বুঝে অপরাধ করতে বিবেকে বাধে না। সততা-মিথ্যাচার, ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য না বুঝলে যেমন বিবেক মজবুত হয় না, ঠিক তেমনি অধিকার-কর্তব্য উভয়ই পালন ছাড়া কারো কাছে অধিকার ঠেকানো যায় না।

অন্যকে জোর করে আটকে রাখলে আর পায়ে শিকল পড়িয়ে নিজেকে স্বাধীন ভাবলেও নিজ আত্মা কখনো স্বাধীন হবে না। অন্তত পক্ষে সৃষ্টিকর্তার নিকট বিবেক বাধা থাকবে। অপরের আত্মাকে অশান্তি দিয়ে নিজের আত্মা কখনো সুখভোগ করতে পারে না। এটাই প্রকৃতির নিয়ম।

এখন হাততালি দিলে আর কষ্ট দেখে টাট্টা করলে, নিজের কপালেও ঠিক তেমনটাই বরাদ্দ আছে। ভাবতে হবে না, কেবল সময়ের অপেক্ষায়!

লেখিকা : অনার্স (ইংরেজি), ১ম বর্ষ, সরকারি গুরুদয়াল বিশ্ববিদ্যালয়।

Similar Posts

error: Content is protected !!