আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
বেকারত্ব একটি অভিশাপ। আর এই বেকারত্বকে পুঁজি করেই শত শত কোটি টাকা আয় করছে সরকার। বিভিন্ন সংস্থা বা বিভাগ থেকে নিয়োগ পরীক্ষার নামে নেয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের ফি। আর বেকার জনশক্তি একটি চাকরি পাওয়ার আশায় হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। একটি আসনের বিপরীতে শতসহস্র প্রার্থী আবেদন করছেন। এ সুযোগই নিচ্ছে সরকারি সংস্থা বা বিভাগগুলো।
দেখা গেছে, এবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগ পরীক্ষার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন ২৪ লাখ এক হাজার ৫৯৭ প্রার্থী। গত ১ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত এ আবেদন কার্যক্রম চলে। এ নিয়োগ পরীক্ষা বাবদ ১৬৮ টাকা ফি আদায় করা হয়। এ হিসাবে ২৪ লাখ এক হাজার ৫৯৭ প্রার্থীর আবেদনে ৪০ কোটি ৩৪ লাখ ৬১ হাজার ৫৭৬ টাকা জমা হয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তাফা কামাল বলেন, সহকারী শিক্ষক নিয়োগে এবার রেকর্ডসংখ্যাক আবেদন জমা হয়েছে। এ বাবদ যে অর্থ জমা হয়েছে, তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ফান্ডে রয়েছে। তবে নিয়োগ পরীক্ষা ও ফল প্রকাশ করতে বিপুল পরিমাণে ব্যয় হয়ে থাকে। এ জন্য সারা দেশে বিপুল পরিমাণে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত রাখতে হয়। সব মিলে অধিকাংশ অর্থ ব্যয় হয়ে যায়।
কিছু দিন আগে খাদ্য অধিদফতরের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। সেখানে এক হাজার ১৬৬ পদের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ১৩ লাখ ৭৮ হাজার। এখানে আবেদন ফি ছিল ১১২ টাকা। ক্যালকুলেশন বলছে, আবেদন ফির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে ১৫ কোটি ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।
এদিকে গত ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য দুই হাজার ২৪ শূন্য পদের বিপরীতে আবেদন করেছিল তিন লাখ ৮৯ হাজার জন। যার ফি ছিল ৭০০ টাকা। এর মাধ্যমে ২৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা নেয়া হয়েছে বেকারদের পকেট থেকে।
চাকরির আবেদনের জন্য কোনো প্রকার ফি না নিতে ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকের মতো সরকারি চাকরিতেও নিয়োগ কার্যক্রমের জন্য ফি নেয়া বন্ধ করা হোক। এমনটিই দাবি চাকরিপ্রার্থীদের।
সূত্র : যুগান্তর, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮