কুলিয়ারচরে পরকীয়ার টানে স্ত্রী-সন্তান ও ধর্ম ত্যাগ

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

পরকিয়ার টানে তিন মেয়ে ও স্ত্রীকে ছেড়ে হিন্দু (সনাতন) ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করে একাধিকবার স্বামী পরিত্যক্ত এক নারীকে বিয়ে করেছেন এক স্বর্ণকার। ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের মাধবদী গ্রামে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হলে গত শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮) ইউনিয়ন পরিষদে একটি সালিশের আয়োজন করা হয়।

জানা যায়, প্রায় বিশ বছর আগে মাধবদী গ্রামের মৃত সচ্ছিতা চন্দ্র রায়ের ছেলে স্বর্ণকার উত্তম চন্দ্র রায় (৪০) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার সরাইল কালিগচ্চর গ্রামের মহাপ্রভু রায়ের কন্যা সুমিত্রা রাণী রায়কে হিন্দু (সনাতন) ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী বিয়ে করেন। বিশ বছর সংসার জীবনে তাদের কোল জুড়ে জন্ম নেয় রিয়া রায় (১৭), প্রিয়া রায় (১৪) ও কেয়া রায় (১২) নামে তিন কন্যা সন্তান।

সংসার জীবনে তাদের মধ্যে কোনো মনোমালিন্য হয়নি। সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। অভিযোগ রয়েছে, ২০ বছর পর এ সুখের সংসারে ফাটল ধরে স্বামীর পরকীয়ার প্রেমের কারণে। উত্তম চন্দ্র রায় পরকীয়া প্রেমের টানে গত ৬ সেপ্টেম্বর নোটারী পাবলিক অব বাংলাদেশ, কিশোরগঞ্জের মাধ্যমে ৫১২ নং রেজিঃ মূলে প্রথমে হিন্দু (সনাতন) ধর্ম ত্যাগের মাধ্যমে নাম পরিবর্তন করে মোঃ সুমন মিয়া নামকরণ করেন।

পরে একই সময়ে স্ত্রী সুমিত্রা রাণী রায়ের বিনা অনুমতিতে ৫১৩ নং রেজিঃ মূলে একই ইউনিয়নের হাজারী নগর গ্রামের ফালু মিয়ার মেয়ে একাধিক স্বামী পরিত্যাক্তা মোছাঃ সালমা আক্তার সুমিকে (৩৫) ২ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে ইসলামী সরা শরিয়ত মতে বিবাহ করেন।

এ সংবাদ পেয়ে আগের স্ত্রী সুমিত্রা রাণী রায় তার বিনা অনুমতিতে অবৈধ পন্থায় আরো একটি বিবাহ করার বিচার দাবি করে তিন সন্তান ও তার ভবিষ্যত জীবনের ভরণপোষণের নিশ্চয়তার সুব্যবস্থা করার জন্য স্থানীয় ছয়সূতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করলে গত ২৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ইউনিয়ন পরিষদে একটি সালিশ বসে। সালিশে এর কোনো সমাধান দিতে না পারায় পুনরায় আগামী শুক্রবার আরেকটি সালিশের আহ্বান করা হয়।

সুমিত্রা রাণী রায় বলেন, তার স্বামী গোপনে ধর্ম ত্যাগ করেছে, এতে তার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু তার অনুমতি ছাড়া একাধিক স্বামী পরিত্যাক্তা নারীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে বিয়ে করে আমাদের মান-সম্মান ক্ষুণ্ন করেছে। এ ছাড়া তিনি আরো বলেন, তার বিয়ের সময় বাবার বাড়ি থেকে আনা স্বর্ণালংকার বিক্রয় করে স্থানীয় ছয়সূতী বাজারে উত্তম চন্দ্র রায়ের নামে একটি জায়গা ক্রয় করেছে। এর একটি ব্যবস্থা হওয়া প্রয়োজন এবং তার তিন সন্তান ও তার ভবিষ্যত কী হবে তা নিয়ে সুশীল সমাজের কাছে প্রশ্ন রাখেন।

সূত্র : নয়া দিগন্ত, ১ অক্টোবর ২০১৮

Similar Posts

error: Content is protected !!