এক লাখ বছর আগে দুজন থেকে মানবজাতির বিস্তার : গবেষণা

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর সকল মানুষ এক যুগলের বংশধর। আর সেই আদি পিতা এবং আদি মাতা এক থেকে দুই লাখ বছর আগে এই গ্রহে বাস করতেন।

বিজ্ঞানীরা ৫০ লাখ প্রাণীর জেনেটিক ‘বার কোড’ জরিপ করেছেন। এক লাখ ভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে মানুষও ছিল। তাদের শক্ত ধারণা, একজন মানব এবং একজন মানবী থেকে আমরা এসেছি। এর আগে এক মহা দুর্যোগের কারণে মানবজাতি প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। পরে এক যুগল থেকেই বংশবিস্তারের মাধ্যমে পুনরায় মানুষ মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে।

এই বার কোড বা ডিএনএ তথ্য প্রাণীর জীবিত কোষের নিউক্লিয়ার বাইরে বিরাজ করে। গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কেবল মানুষই দু’জন নারী-পুরুষ থেকে আসেনি, এই গ্রহের প্রতি ১০টির মধ্যে ৯ প্রজাতির প্রাণীই মাত্র একটি যুগল থেকে এসেছে।

আজকের পৃথিবীতে যত প্রজাতির প্রাণী বেঁচে রয়েছে তার ৯০ শতাংশের আদি পিতা-মাতা প্রায় একই সময়ে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্ম দিয়েছে। আর এমনটা ঘটেছিল আড়াই লাখ বছর আগেই।

সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব বাসেলের সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মার্ক স্টোকেল এবং রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ডেভিড থালের মনে করেন, গবেষণাটি বেশ চমকপ্রদ। তাদের এই গবেষণায় আরো ছিলেন রকিফেলার ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞরা। এটা প্রকাশিত হয়েছে “হিউম্যান এভোলেশন”-এ।

তারা মূলত দ্রুত বর্ধনশীল জেনেটিক ডেটাবেজ থেকে অসংখ্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন। সেই সঙ্গে ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্ব সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। আজ থেকে ৬৫ মিলিয়ন বছর আগে মহা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ডাইনোসর বিলুপ্ত। পৃথিবীর বেশিরভাগে প্রাণ বিলুপ্ত হওয়ার সেই সময়টার কথাই আমরা জানি। তারও অনেক পরে আবারো মনুষ্য প্রাণের জন্ম কেন দরকার হয়েছিল তা বেশ রহস্যময় বিষয়। কাজেই এ গবেষণার স্পষ্ট উপসংহার টানা রীতিমতো অসম্ভব।

রকিফেলার ইউনিভার্সিটির প্রোগ্রাম ফর দ্য হিউম্যান এনভায়রনমেন্টের পরিচালক জেসি আসুবেল বলেন, মানুষের সঙ্গে মানুষের মিল তো আছেই, এমনকি অন্যান্য প্রাণীর থেকেও খুব বেশি ভিন্ন নয়। যদি মঙ্গল থেকে কোনো এলিয়েন এসে একদল মানুষ এবং একঝাঁক কবুতর নিয়ে গবেষণা করে তবে দেখা যাবে, মাইটকোন্ড্রিয়াল ডিএনএ এর বিচারে দুটো প্রাণীর মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। সব মানুষের মৌলিক জীবতত্ত্ব একই। তারা সংস্কৃতি, অভিজ্ঞতা এবং এমন আরো কিছু জিনিসের ওপর ভিত্তি করে পৃথক হয়।

মাইটকোন্ড্রিয়াল ডিএনএ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সঞ্চারিত হয়েছে। কিন্তু সেখানে মানুষের সঙ্গে মানুষের তেমন কোনো পার্থক্য ঘটেনি। তবে সংখ্যাধিক্য এবং ভৌগলিক বিচিত্রতার কারণে মানুষের জিনব্যবস্থায় বেশ বৈচিত্র্য এসেছে। এমনটা আর কোনো প্রাণীর মধ্যে ঘটেনি।

সূত্র : ডেইলি মেইল, কালের কণ্ঠ  [৩০ নভেম্বর ২০১৮]

Similar Posts

error: Content is protected !!