আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
২০১৮ সালের নতুন জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালায় বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার ক্ষেত্রে আগের তুলনায় বেতন কমে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষকরা। জানা যায়, আগে গ্রেড পরিবর্তনে যে বেতন বাড়তো বর্তমান নীতিমালায় সেই হারে গ্রেড ও বেতন বাড়ছে না। তুলনামূলকহারে বেতন আরও কমে যাচ্ছে। আগে আট বছরে পদোন্নতি পেয়ে সপ্তম গ্রেডে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও নতুন নীতিমালায় ১০ বছরে সেই গ্রেড পাবেন প্রভাষকরা। ১০ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেডে বেতন পাওয়ার পর পরবর্তী ৬ বছরে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি না হলে বেতন গ্রেড ৮ থেকে ৭-এ উন্নীত হবে।
২০১৮ সালের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ)-এর জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালার ১১ দশমিক ৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রভাষকরা এমপিওভুক্তির আট বছর পূর্তিতে ৫:২ অনুপাতে জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন। অন্য প্রভাষকরা ১০ বছর সন্তোষজনক পূর্তিতে বেতন গ্রেড ৯ থেকে ৮ গ্রেড প্রাপ্য হবেন।
রাজশাহীর আড়ানী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শাহাবাজ আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সেই হিসেবে ১০ বছরে একজন প্রভাষকের বেতন বাড়বে এক হাজার টাকা। নবম গ্রেডে প্রভাষকদের বেতন ২২ হাজার টাকা। আর অষ্টম গ্রেডে বেতন ২৩ হাজার টাকা। আর ১৬ বছরে সপ্তম গ্রেড পাওয়ার পর বেতন বেড়ে দাঁড়াবে ২৯ হাজার টাকায়। এমপিওভুক্ত শিক্ষকের ১৬ বছরে বেতন বাড়ছে সাত হাজার টাকা। তবে অনুপাতিক হারে যেসব প্রভাষক পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হবেন, তারা ষষ্ঠ গ্রেডে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা বেতন পাবেন। তারা বঞ্চিত না হলেও বঞ্চিত হচ্ছেন অন্য প্রভাষকরা।’
২০১০ সালের (২০১৩ সালে সংশোধিত) নীতিমালায় বলা ছিল, প্রভাষক পদে এমপিওভুক্তির আট বছর পূর্তিতে ৫:২ অনুপাতে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন। অন্য প্রভাষকরা আট বছর অভিজ্ঞতা পূর্তির পর একটি সিলেকশন গ্রেড প্রাপ্য হবেন (নবম গ্রেড থেকে সপ্তম গ্রেড। অর্থাৎ ২২ হাজার টাকা থেকে আট বছরে বেতন বাড়বে সাত হাজার টাকা। শিক্ষকরা বলেন, আনুপাতিক হারে পদোন্নতি না পাওয়া অন্য শিক্ষকরা এখন সে সুযোগ পাবেন না। ১০ বছরে অষ্টম গ্রেডে ২৩ হাজার টাকা বেতন পাবেন।’
রাজধানীর বর্ণমালা স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৫ সালে জাতীয় বেতন কাঠোমোতে সিলেকশন গ্রেড দেওয়া হয়নি। সহকারী অধ্যাপক পদে আনুপাতিক হার বিবেচনায় যেসব শিক্ষকরা পদোন্নতি পাবেন না তারা বর্তমান নীতিমালা অনুসারে ১০ বছর পূর্তিতে নবম গ্রেড থেকে অষ্টম গ্রেড পাবেন। অথচ আগের নীতিমালায় আট বছরেই সপ্তম গ্রেডে উন্নীত হওয়ার সুযোগ ছিল। এই নীতিমালায় শিক্ষকদের বঞ্চিত করা হয়েছে।’
তবে নীতিমালা সংশোধন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ নিয়োগ ও শিক্ষকদের গ্রেড পরিবর্তনসহ নীতিমালার কয়েকটি বিষয় সংশোধন করা হচ্ছে। এ নিয়ে বৈঠক হয়েছে। আরও বৈঠক করে বিষয়গুলো সংশোধন করা হবে। আশা করা যায়, একমাসের মধ্যে নীতিমালা সংশোধনের কাজ চূড়ান্ত হবে।’
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন, ১৫ জানুয়ারি ২০১৯