হাটহাজারীতে তেলবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত

মাহমুদ আল আজাদ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি ।।

হাটহাজারী পৌরসভার মধ্যম দেওয়াননগর আজিজিয়া মাবুদিয়া হোসাইনিয়া মাদরাসার সামনে মরা ছড়া নামক ব্রিজে চট্টগ্রাম থেকে হাটহাজারী ১১ মাইল ১০০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যাওয়ার পথে তেলবাহী ট্রেনের তিনটি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়েছে। এর মধ্যে একটি ওয়াগন মরাছড়া ভেঙে খালে পড়ে যায়। এতে প্রচুর পরিমাণে তেল পড়ে যায়। কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

সোমবার (২৯ এপ্রিল ২০১৯) বিকেল ২টার দিকে পৌরসভার দেওয়াননগর এলাকায় মরা ছড়া ব্রিজে রেল এ দুর্ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম থেকে আসা তেলবাহী ট্রেনটি ৭টি বগির প্রতিটি বগিতে ২৪ হাজার লিটার তেল রয়েছে। এ সময় ট্রেনটির তিনটি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়ে পড়ার পর সেতুর গার্ডার ভেঙে একটি ওয়াগন খালে পড়ে গেছে। এতে তেল ছড়িয়ে পড়ে।

এরপর থেকে চট্টগ্রাম-নাজিরহাট রেললাইনে রেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। এমন খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ মডেল থানার পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম। পড়ে যাওয়া তেলগুলো মরা ছড়া দিয়ে হালদা নদীতে প্রবেশ করতে না পারার জন্য মরা ছড়ায় বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রাখা হয় কয়েকটি স্থানে। এসময় ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন হালদা নদীর গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া, রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের কর্মকর্তারা, হাটহাজারী মডেল থানার ওসি বেলাল উদ্দীন জাহাংগীর, চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি মোস্তাফিজ ভুইয়া, ১১ মাইল পিডিবির ম্যানেজার শফিউদ্দীন আহমেদ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদসহ অনেকেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।

তেলবাহী ট্রেনের চালক লোকো মাস্টার নাছির উদ্দীন বলেন, তেলবাহী ট্রেনটি চালিয়ে আসার সময় ব্রীজের সেখানে একটি আওয়াজ হলে দেখি মাঝখানের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে একটি মরা ছড়ার মধ্যে পড়ে যায়।

হালদা নদীর গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, যদি এ তেলসমূহ হালদায় পড়ে তাহলেই ডিম ছাড়ার শেষ সময় বড় ক্ষতিই হবে। কোনভাবে এ তেল হালদায় প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যবস্থায় করতে হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ রুহুল আমীন বলেন, তেলবাহী একটি ট্রেন পৌরসভার মধ্যম দেওয়াননগর এলাকায় মরা ছড়ার ব্রীজ ভেঙ্গে পড়ার খবর পেয়ে ছুটে এসেই দেখি প্রচুর পরিমাণের তেল পানিতে পড়ে প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে চলছে। তা হালদা নদীতে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য পৌরসভার শ্রমিক দিয়ে মরা ছড়ায় বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রেখে পাম্প মেশিন দিয়ে তা সরিয়ে ফেলানো হচ্ছে। যাতে তা হালদায় কোনভাবেই যেন প্রবেশ করতে না পারে।

এরপর চট্টগ্রাম-নাজিরহাট রেললাইনটি সচল করতে চট্টগ্রাম থেকে একটি রিলিফ ট্রেন রওনা দিয়েছে। লাকসাম থেকে আরেকটি রিলিফ ট্রেনকে চট্টগ্রামে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।

Similar Posts

error: Content is protected !!