মহাস্থান (বগুড়া) প্রতিনিধি ।।
বগুড়ার মহাস্থানে শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজুর হস্তক্ষেপে ২টি চোরাই অটোভ্যান উদ্ধার এবং চোরকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। জানা যায়, শিবগঞ্জ উপজেলার গুজিয়া ইউনিয়নের জব্বার আলীর ছেলে একাধিক অটোভ্যান চোর ইউনুস আলী (৩৫)। বৃহস্পতিবার বিকালে মহাস্থান হাটে কাঁচামাল বহন করতে আসা গোবিন্দগঞ্জের এক অসহায় ব্যক্তির অটোভ্যান চুরি করে। এ অটোভ্যানের ব্যাটারি খুলে বিক্রি করার সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তাকে আটক করে উত্তম মধ্যম দেয়া হয়।
এ সময় মহাস্থান হাটের ইজারাদারের একাংশ সমাজসেবক সিরাজুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান (জিয়া), আরিফুল ইসলাম সুমন অটোভ্যান চোরকে উদ্ধার করে মহাস্থান বণিক সমিতি অফিসে নিয়ে যায়। সন্ধ্যায় খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজু বণিক সমিতির অফিসে এসে চুরির বিষয়ে বিস্তারিত শোনেন। সেখানে একে একে ৪ জন বিভিন্ন সময়ে অটোভ্যান হারানো ব্যক্তি চেয়ারম্যান রিজুকে চুরি যাওয়া সম্পর্কে অবহিত করেন। এসময় চোর ইউনুস আলীকে চেয়ারম্যান এসব চুরি হওয়া ভ্যানের বিষয়ে জানতে চাইলে সে এড়িয়ে যায়। পরে চেয়ারম্যান চোরকে কৌশলে বলেন, চুরি করা অটোভ্যানের সন্ধান দিলে আপোষে ছেড়ে দেওয়া হবে।
চেয়ারম্যানের কথা শুনে চোর ইউনুস জানান, ইতিপূর্বে একাধিক অটোভ্যান চুরি করে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছি। বর্তমানে ২টি অটোভ্যানের সন্ধান তার কাছে আছে বলে সে জানায়। একটি আশেপাশের এলাকা থেকে উদ্ধার করে গোবিন্দগঞ্জের হারানো ভ্যান মালিককে প্রমাণস্বরূপ দেওয়া হয়। আরেকটি বগুড়া সদরের পীরগাছা বৌতবাড়ি নামক গ্রামে আছে বলে সে স্বীকার করে।
এসময় চেয়ারম্যান রিজুর নির্দেশে ৫টি মোটরসাইকেল ও অটোভ্যান হারানো ২ ভুক্তভোগীকে সাথে নিয়ে চোরের দেয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়। সেখানে চোর ভ্যানটি তার নিজের দাবি করে ভ্যানের ব্যাটারির সমস্যা হয়েছে। এই ব্যাটারি বিক্রি করে নতুন ব্যাটারি কিনবে বলে গোপাল নামের এক ব্যক্তির কাছে ৬টি ব্যাটারি প্রায় ১০ হাজার টাকা বিক্রি করে। এবং অটোভ্যানটি কাল নতুন ব্যাটারি কিনে সেটিং করে নিয়ে যাবে বলে সেখানে রেখে যায়।
চোরকে সাথে নিয়ে চোরের তথ্যমতে দু’টি ভ্যান উদ্ধার করে রাত ১০টায় চেয়ারম্যানের কর্মীরা বণিক সমিতির কার্যালয়ে নিয়ে আসে। এরপর দেনদরবার শেষে চুরি হওয়া ২টি অটোভ্যানের প্রকৃত মালিকের উপযুক্ত প্রমাণাদি দিয়ে তাদের এলাকার ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে অটোভ্যান হারানো অপর ২ ব্যক্তির ভ্যান হারানোর সাথে চোর সংযুক্ত নয় তার সম্পৃক্ততা নেই বলে চোর জানায়। এ বিবেচনায় অসহায় ২ অটোভ্যান চালককে ৫ হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা করা হয়। রাত ১১টায় চোর ইউনুস আলীকে শিবগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজুর এমন হস্তক্ষেপে এলাকার অসহায়, গরীব চুরি আতঙ্কে থাকা চালকেরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।