নির্বাচনী বিরোধে কৃষক খুন

বিশেষ প্রতিনিধি ।।
নির্বাচনী বিরোধে সোহেল মিয়া (৩৫) নামে এক কৃষক খুন হয়েছেন। রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির কাছেই তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সোহেল কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার রশিদাবাদ ইউনিয়নের বেরুয়াইল গ্রামের মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি।

kishoregonj_sohel

পুলিশ জানায়, মহিনন্দ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সোহেল মিয়া তালা-চাবি প্রতীকের ইউপি সদস্য প্রার্থী আব্দুস সালামের সমর্থক ছিলেন। রবিবার রাতে মোরগ প্রতীকের অপর ইউপি সদস্য প্রার্থী শফিকুল ইসলাম জহিরের নির্বচনী মিছিল হয়। তখন জহিরের সমর্থকদের সঙ্গে সালামের সমর্থকদের বাকবিতণ্ডা ও ঝগড়া হয়। এর জের ধরেই সোহেলকে রাতে একা পেয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন তার বুকে ছুরিকাঘাত করে।

সোহেলের ছোটভাই বুলবুল জানান, তার ভাই সোহেল একজন নিরীহ প্রকৃতির লোক ছিলেন। পারতপক্ষে কারো সঙ্গে বিরোধে জড়াতেন না। তিনি অভিযোগ করেন, রাতে মিছিলের পর তার ভাই বাড়িতে চলে যান। পরে তাকে ফোন করে কলাপাড়া মোড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি রেইনট্রি গাছের কাছে যাওয়া মাত্রই কয়েকজন তাকে বুকে ছুরি মেরে চলে যায়। এ সময় তিনি দাবি করেন, মেম্বার প্রার্থী জহিরের প্ররোচনায় তার সমর্থক সাইদুরের নেতৃত্বে এ হত্যাকা- হয়েছে। তবে এ বিষয়ে
বক্তব্য জানতে মেম্বার প্রার্থী জহিরের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,ঘটনার পর থেকে তিনি গা-ঢাকা দিয়েছেন।

সোহেলের মা ফিরোজা বেগম ও স্ত্রী লায়লা আক্তার অভিযোগ করেছেন, মিছিলের পর সোহেল মিয়া বাড়ি চলে এসেছিল। তাকে ফোন করে জরুরী কথা আছে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১২টার দিকে বাড়িতে খবর আসে, তাকে ছুরি মারা হয়েছে।

সোহেলের চাচাতো ভাই আল-আমিন জানান, জহিরের পক্ষে নির্বাচন করার জন্য তাদের পরিবারকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল কিন্তু তারা সেই পক্ষে যায়নি। এতে জহিরের লোকজন ক্ষিপ্ত ছিল তাদের ওপর।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন জানান, খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রাতেই এলাকার পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে তদন্ত ছাড়া এর পেছনে কারো ইন্ধন আছে কি-না, কারা জড়িত, হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিল কারা অথবা নির্বাচনের সঙ্গে এ হত্যাকা-ের কোনো যোগসূত্র আছে কি-না তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। সবদিক মাথায় রেখে মামলার আগেই পুলিশ নিজেদের মতো খোঁজখবর নিচ্ছে। মামলার পর পুলিশ মাঠে নামবে। তিনি আরো জানান, লাশ ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যার পর দাফন করা হয়েছে।

Similar Posts

error: Content is protected !!