আবদুল্লাহ আল মহসিন ।।
এখন নিকলী উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। পাশাপাশি চলছে ধানকাটা উৎসব; যদিও অসময়ের অতিবৃষ্টিতে এই অঞ্চলের ধানক্ষেতগুলো প্লাবিত-প্রায়। একরকম বাধ্য হয়েই আধাপাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এখানকার সাধারণ মানুষ দুটি ক্ষেত্রেই আনুষ্ঠানিকতার কমতি রাখতে নারাজ।
ভোর থেকে শুরু হয় ধানকাটার সংগ্রামী উৎসব। দিনভর কঠোর পরিশ্রম করে ধানগুলো নিরাপদ স্থানে তুলে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। সবার মাঝে একই আবেগ কাজ করছে। আর অপেক্ষার সময় নেই। যেভাবেই হোক সর্বোচ্চ পরিমাণ ফসল তুলতে হবে গোলায়। এমন পরিবেশে নিকলী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে চলছে নির্বাচনী প্রচারণা। ৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। সেই থেকে নিজ নিজ পছন্দের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের পক্ষে মিছিল-মিটিং নিয়ে সাধারণ মানুষ দ্বিগুণ ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোট গ্রহণ আগামী ২৩ এপ্রিল।
ধানকাটার ধুম লাগার ফলে নির্বাচনী প্রচারণায় দিনের বেলায় কিছুটা নীরবতা দেখা যাচ্ছে নিকলীর প্রতিটি এলাকায়। দিনের মিছিল-মিটিংয়ে উপস্থিতির সংখ্যা অনেকটাই কম। তাই বলে কি আগামী ৫ বছরের জন্য তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রক্রিয়া কোনো উৎসব ছাড়াই কেটে যাবে! ঝিমিয়ে থাকতে রাজি নন নিকলীর প্রতিটি স্তরের মানুষ। ধানকাটার মাঝেই অনেকে সেরে নিচ্ছেন পারস্পরিক পছন্দ-অপছন্দের আলাপন। কখনো কখনো এটি ছোটখাটো তর্ক-বিতর্কেরও সৃষ্টি করছে। কিন্তু মোটা দাগে বেশ উপভোগই করে নিকলীর ভোটারেরা।
দিনের বেলায় হাড়-ভাঙা খাটুনির পর সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় নির্বাচনী আড্ডা-মিছিল-মিটিং। অলি-গলি থেকে শুরু করে চা-পানের দোকান, ক্লাবঘর, নির্বাচনী প্রচারণা ক্যাম্প- দেখে বোঝার উপায় নেই ভোর হতে না হতেই ছুটতে হবে মাঠে। সবাই যেন ভুলেই যান পরিশ্রান্ত দিনের কথা। মেতে ওঠেন নিজের পছন্দ-অপছন্দের তালিকা সামনে রেখে আলোচনায়। এ সময় দেখে বোঝার উপায় থাকে না, এই জায়গাগুলো দিনের প্রায় পুরোটা সময় থাকে একরকম মানুষশূণ্য। শ্লোগানে-শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে মাঠ-ময়দান আর ব্যস্ততম সব সড়ক। পাড়া-মহল্লায় ঘরে ঘরে দলবেঁধে প্রার্থীদের মনোনীত ব্যক্তিরা ভোট চাইতে ঘুরে বেড়ান। কোনো কোনো প্রার্থী রাতে পাড়ায় পাড়ায় খণ্ড খণ্ড উঠোন বৈঠকের আয়োজন করছেন।