নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
আমাদের নিকলী ডটকম-এ দুই দফায় সংবাদ প্রচার করা হয় মোহরকোনা-কামালপুর সংযোগ সেতুর ভঙ্গুর পরিস্থিতি নিয়ে। ২০১৫ সালের অক্টোবরের ৫ তারিখে প্রথমবার, দ্বিতীয়বার প্রচার করা হয় ১৮ এপ্রিল ২০১৬। প্রথমবারের সংবাদ পরিবেশনের পর স্থানীয় প্রতিনিধিরা বাঁশ দিয়ে আপাত সমাধানের চেষ্টা করেন। কিন্তু এতে তেমন ফল পাওয়া যায়নি। এর জের দেখা গেলো কয়েক মাসের ব্যবধানেই।
গত মাসে যখন নিউজ করা হয়, তখন সেতুর সাথে সড়কের মোহরকোনা অংশের সংযোগস্থলটি একেবারে দেবে যায়। এ অবস্থায় সিংপুর, কারপাশা ও দামপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা উপজেলা সদরের সাথে প্রয়োজনীয় কাজ সারতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
আমাদের নিকলী ডটকম-এ সংবাদ পরিবেশনের পর কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটির সংস্কার জরুরি বিবেচনায় গতকাল ১৭ মে মঙ্গলবার পরিদর্শন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার। আরো উপস্থিত ছিলেন দামপাড়া ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবু তাহের।
আমাদের নিকলী ডটকম-এর এই প্রতিনিধি কথা বলেন দামপাড়া ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবু তাহেরের সাথে। তিনি জানান, বিশেষ বরাদ্দ পাওয়ার আগেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে সেতুর কাজ শুরু করেছেন। প্রাথমিকভাবে আর্থিক যোগান তিনি নিজেই দিচ্ছেন। এ নিয়ে নিকলী-বাজিতপুরের সংসদ সদস্যের সাথে তিনি কথা বলেছেন। সংসদ সদস্য আলহাজ আফজাল হোসেন তাকে জানিয়েছেন, জনস্বার্থ বিবেচনায় রেখে দ্রুততার সাথে কাজ শেষ করেন। পরবর্তীতে বিল করে এটি পাস করিয়ে দেয়া হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দুই দিন হলো সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশনার কথা জানিয়েছেন সেখানের নির্মাণের কাজে নিয়োজিতরা। একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ দেখা যায়, ৭/৮ বছরের এক শিশু লাল আর সবুজ রঙের দুটো পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে আছে। কখনো লাল পতাকা, কখনো সবুজ পতাকা দেখাচ্ছে। জানতে চাওয়া হলো তার এমন ব্যতিক্রম কাজের কারণ। লাল-সবুজ পতাকাগুলোয় খেলতে থাকা কোমলমতি শিশুটি জানালো, তিনি সেতুতে ট্রাফিকের কাজ করছেন। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেতুটির এক পাশ দিয়ে একটি-একটি করে গাড়ি পারাপারের সুযোগ রয়েছে। এই এপাশ-ওপাশ আসা-যাওয়ার কাজটির নিয়ন্ত্রণেই তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।

কামালপুরের স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা হয়। তারা জানান, এই সেতুটি নির্মাণের ফলে নিকলীর উত্তরের তিনটি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের যোগাযোগে খুবই সুবিধা হয়েছিলো। এসব এলাকার সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে সেতুটি ভালোভাবে সচল রাখা খুবই জরুরি। কামালপুরের বাসিন্দা কামরুল হাসান জানান, সেতুটির নির্মাণ কাজে দীর্ঘস্থায়ীত্বের কথা মাথায় রাখা দরকার। সেতুটি নদীর পানির স্রোত যেমন মোকাবিলা করতে হয়, তেমনি হাওরের ঢেউও আছড়ে পড়ে। সব দিক থেকে হিসাব-নিকাশ করে কাজ এগিয়ে নেয়ার জন্য স্থানীয় প্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।