আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
১৯৬৪ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন কিংবদন্তি মুষ্টিযোদ্ধা ও একুশ শতকের বিশ্বসেরা ক্রীড়াবিদ মোহম্মদ আলী। মার্কিন সমাজের বর্ণবাদ আর বৈষম্যমূলক আচরণের বিপরীতে ইসলামের সাম্য আর শান্তির বিধান তাকে আকর্ষণ করে। এরপর ধীরে ধীরে ইসলামের সংস্পর্শে আসেন এই বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিত্ব।
১৯৬৪ সালে ‘নেশন অব ইসলাম’ নামের একটি সংগঠনের সাথে পরিচিত হন। ইসলাম শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে কোনো পার্থক্য ও ব্যবধান রাখে না বলে জানতে পারেন তিনি। ইসলামের বিধিবিধানে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মোহাম্মদ আলী নাম ধারণ করেন। অনেক সাংবাদিক তার এই নতুন নাম গ্রহণ করতে অস্বীকার করলে আলী বলেন, ‘ক্যাসিয়াস ক্লে ছিল আমার ক্রীতদাসী নাম’। তারপর আস্তে আস্তে সব মহলে তিনি নতুন নামে পরিচিত হতে শুরু করেন।
‘নেশন অব ইসলাম’ সংগঠনটি শুধু ইসলাম নিয়ে কাজ করত না। তারা ইসলাম ও খ্রিষ্টান ধর্মের মধ্যে সমন্বয় করে একটি নতুন মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছিল। বিষয়টি পরে বুঝতে পারেন মোহাম্মদ আলী। তাদের থেকে পৃথক হয়ে ১৯৭৫ সালে পুরোপুরি সুন্নি মুসলমান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপরই তিনি নিজেকে প্রকৃত মুসলিম বলে পরিচিত করতে থাকেন। ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে আলী বলেন, ‘আমাকে যদি বক্সিং ও ইসলামের মধ্যে কোনো একটিকে বেছে নিতে বলা হয় তাহলে অবশ্যই আমি ইসলামকে বেছে নেবো’।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের অধিকারের ব্যাপারে সোচ্চার ছিলেন মোহাম্মদ আলী। মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন তিনি। শান্তিদূত হিসেবে ভ্রমণ করেছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান। মরোক্কো আর ইন্দোনেশিয়ার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য সংগ্রহ করেছেন ত্রাণ। ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পর মুসলমানরা আক্রমণের শিকার হলে ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। তিনি কোনো সন্ত্রাসীর কর্মকাণ্ডকে ইসলাম ধর্ম কিংবা মুসলমানদের ঘাড়ে না চাপাতে মার্কিনিদের প্রতি আহ্বান জানান।
সাম্প্রতিক সময়ে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইসলাম বিদ্বেষের বিষয়ে চুপ করে থাকেননি আলী। ট্রাম্পের মুসলমানদের আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনার প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের উচিত ইসলাম সম্পর্কে সঠিক ধারণা গ্রহণ করা। … ইসলাম কখনোই হত্যাযজ্ঞ সমর্থন করে না। এগুলো ইসলাম সম্পর্কে মানুষের ধারণাকে ভুল পথে পরিচালিত করছে’। সূত্র : টাইম, নয়া দিগন্ত