আবদুল্লাহ আল মহসিন ।।
বর্ষা ঋতু বাংলার চিরায়ত রূপের সৌন্দর্য প্রকাশ করে। আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা ছেয়ে যায়। গ্রীষ্মের খরতাপে প্রকৃতি যখন রুক্ষ হয়ে পড়ে তখন রিম ঝিম বৃষ্টি নিয়ে এলো বর্ষার স্নিগ্ধতা। বাতাসে ভেসে বেড়ায় কদম কেয়ার গন্ধ। পথ ঘাট প্লাবিত হয় পানিতে। খাল-বিল নদ-নদী টইটম্বুর হয় পানিতে। এ সময় পল্লী গ্রামের দামাল ছেলেরা ডিঙি নৌঙায় চড়ে বাইসালী করে। নানা কায়দায় মাছ ধরে। হাওরে জলাঙ্গীর ঢেউয়ের নাচন দেখা যায়। প্রকৃতি ঘন সবুজ বনে শোভা ছড়ায়।
বর্ষার বন্দনা গেয়ে বাংলার কবি-সাহিত্যিকরা গান কবিতা রচনা করেছেন। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার “বর্ষার দিনে”র কবিতায় আবহমান বাংলার রূপ সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছেন। কবিতার ভাষায় তিনি বলেছেন, “এমন দিনে তারে বলা যায়-এমন ঘনঘোর বরিষায়-এমন মেঘস্বরে বাদল ঝরঝরে তপন হীন ঘন তমসায়”।
দেশে আবহাওয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় আর নদী ডোবা ভরাটের ফলে আজ বর্ষার সৌন্দর্য অনেকটা নষ্ট হওয়ার পথে। তবে হাওর এলাকা হিসেবে নিকলী ও পার্শ্ববর্তী ইটনা, অষ্টগ্রাম, মিটামইন ভিন্ন এক সৌন্দর্য রয়েছে। এ সময় গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তখন ছোট নাও কিংবা বাঁশের সাঁকো দোলতে থাকে। বর্ষাকালের চিরায়ত রূপের দেখা মিলবে হাওরে। ঢেউয়ে। রুদ্র বাতাসে। ক্ষেপানো আফালের তোড়ে।