প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পাগলীকে উপর্যুপরি জখম

shila barman

বিশেষ প্রতিনিধি ।।

নিকলীতে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মঙ্গলবার ২৩ আগস্ট দুপুর দেড়টায় শিলা বর্মণ (২৮) নামে এক মানসিক রোগিকে কাঁচির উপর্যুপরি আঘাতে মারাত্মক জখম করেছে মৃদুল বর্মণ (২০) নামে এক বখাটে ও তার মা কল্পনা বর্মণ (৫২)। হতদরিদ্র শিলার পরিবারের উন্নত চিকিৎসার ক্ষমতা না থাকায় নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই আশংকাজনক অবস্থায় ভর্তি রেখেছে শিলাকে।

আহত শিলা উপজেলা সদরের বর্মণ পাড়ার হতদরিদ্র অনিল বর্মণের মেয়ে এবং বখাটে মৃদুল একই পাড়ার প্রবাসী মৃণাল বর্মনের ছেলে।

শিলা ও তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ নিকলী উপজেলা সদরের বর্মণপাড়া গ্রামের প্রবাসী মৃণাল দেবনাথের বখাটে ছেলে মৃদুল প্রতিবেশী অনিল বর্মণের মানসিক রোগি শিলাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছে। একা পেলেই মৃদুল শিলার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়ার চেষ্টা করে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় শিলাকে মৃদুল দুই ঘরের ফাঁকে পেয়ে জাপটে ধরে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে থাকে। শিলা বাধা দিলে মৃদুল শিলাকে কিল থাপ্পড় মারতে থাকে। শিলার গালির শব্দে মৃদুলের মা কল্পনা বর্মণ ছেলের সাথে যোগ হয়ে শিলাকে এলোপাতাড়ি কিল, লাথি মারতে থাকে।

shila barman

এ সময় মৃদুল মা কল্পনা বর্মণের হাতে থাকা কাপড় কাটার বড় কাঁচি নিয়ে শিলাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে শিলার মাথায়, কপালে ও হাতে গভীর জখম হয়। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় উদ্ধার করে শিলাকে বৃদ্ধ পিতা-মাতা হাসপাতালে নিয়ে যান।

কর্তব্যরত সহকারী ডাক্তার আবু সাঈদ শিলার বাঁ হাতে ও মাথায় গভীর ক্ষত দেখে উন্নত চিকিৎসা নিতে অন্যত্র যেতে পরামর্শ দেন। শিলার হতদরিদ্র পরিবারের চিকিৎসার খরচ মেটানোর সামর্থ্য না থাকায় তাদের অনুরোধে মুখে নিকলী হাসপাতালেই ভর্তি রাখা হয়েছে।

শিলার সাথে কথা হলে সে এ জানায়, মৃদুল আমার বয়সে অনেক ছোট। আমাকে খারাপ খারাপ কথা বলে। ওর সাথে প্রেম করতে রাজি হইনি বলে আমাকে মেরেছে। ওর মা বলে আমি নাকি ওকে খারাপ কনরা দিতাছি।

শিলার পিতা অসুস্থ্য অনিল বর্মণ জানান, ৭ম শ্রেণিতে পড়ার সময়ও শিলার মাঝে ৪-৫ বছরের বাচ্চাদের মতো আচরণ দেখা দেয়। এ কারণে তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। দেখতে অনেক সুন্দরী হলেও মানসিক বৈকল্যের কারণে শিলা অবিবাহিতই থেকে যায়।
বর্তমানে পূর্ণ যুবতী এবং বিয়ের বয়স পেরুতে বসলেও শিশুদের মতো আচরণের কারণে শিলা অবিবাহিতই থেকে গেছে। মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে গালিগালাজ করলেও সে মারাত্মক কোনো অপরাধ করেছে বলে কেউ বলতে পারবে না। আমরা গরীব। মামলা মোকদ্দমা করার ক্ষমতাও নেই। আমি এর বিচার চাই।

শিলাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া নিকলী হাসপাতালের সহকারী ডাক্তার আবু সাঈদ জানান, শিলার হাতের ও মাথার আঘাত গভীর। রক্তপাতও হয়েছে অনেক। উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন ছিলো।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ দেয়া হয়নি বলে নিকলী থানা সূত্রে জানা যায়।

Similar Posts

error: Content is protected !!