মো. আরিফুল ইসলাম, বাজিতপুর সংবাদদাতা।।
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ৩৩ সদস্যের প্রাথমিক স্কোয়াডে প্রথমবারের মত ডাক পেয়েছেন বাজিতপুরের সারোয়ার জামান নিপু। কিশোরগঞ্জবাসীর গর্ব তরুণ এ ফুটবলার নিপুর বাড়ি উপজেলার সরারচর ইউনিয়নের ভাণ্ডা গ্রামে। মরহুম লিয়াকত আলী ও মিনা বেগমের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে নিপুই সবার ছোট।
নিপু ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত সাফ অনুর্ধ্ব ১৬ ফুটবল প্রতিযোগিতায় সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়ে নজর কাড়ে দেশের সকল ক্রীড়া সংগঠকের। শেখ জামালের বদলী খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামলেও এখনো পেশাদার লীগে অভিষেক হয়নি তার। নিপুকে নিয়ে গর্বিত কিশোরগঞ্জ তথা বাজিতপুরের ফুটবল প্রেমীদের আশা ছিল একদিন তিনি জাতীয় দলের হয়ে লাল-সবুজ জার্সি গায়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন।
যখন আসবে নিপুর নাম সাথে থাকবে বাজিতপুর। এ ভবিষ্যত স্বপ্ন পূরণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে তার জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পাওয়াটাকে।

ছোটবেলা থেকে ফুটবলের প্রতি ঝোঁক থাকা দরিদ্র পরিবারের সন্তান নিপু নিজের কঠোর পরিশ্রম ও অদম্য ইচ্ছা শক্তির জোরে এত দূর এসেছেন। গ্রামের হয়ে তেমন সুযোগ না পাওয়ায় প্রায়ই ইচ্ছেটা মনের ভিতর চাপা পড়ে থাকত তার। কিন্তু কটিয়াদী উপজেলার পুলেরঘাটে তার বোনের বিয়ে হলে প্রায়ই বোনের বাড়িতে বেড়াতে যেতেন। সেখান থেকেই ফুটবল নিয়ে তার লুকায়িত স্বপ্ন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করে।
সেখানে বন্ধ হয়ে যাওয়া কালিয়াচাপড়া চিনিকল মাঠে ভূঁইয়া একাডেমী নামের সংগঠনে একদল কিশোরকে ফুটবলের প্রশিক্ষণ নিতে দেখে নতুন করে স্বপ্নের জাল বুনেন নিপু। তিনি এলাকার বাসিন্দা ফুটবলপ্রিয় পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ২০১২ সালে এই একাডেমিটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই একাডেমিতে কিশোর ফুটবলাররা বিনা খরচে প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়ে থাকে।
ফুটবলপ্রিয় হারুন অর রশীদ খেলোয়াড়দের বল, বুট, পোশাক, কোচের বেতন থেকে শুরু করে যাবতীয় ব্যয় সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও নিজেই বহন করেন। এ একাডেমী থেকেই প্রশিক্ষিত হয়ে নিপু স্বল্প পরিসরে নজর কাড়ে একাডেমীর প্রধান, কোচসহ সংশ্লিষ্ট সকলের। এরপরের ইতিহাস প্রায় সকলের জানা।
খেলার গতি দ্বারা ও নৈপুণ্যে নিপুই একদিন হয়ে উঠবে জাতীয় দলের সেরা স্ট্রাইকার এটাতেই আশাবাদী ভক্ত সর্মথকরা।