মো. আরিফুল ইসলাম, বাজিতপুর সংবাদদাতা।।
বিপিএলকে ঘিরে অন্যরকম এক জুয়ায় মেতেছে কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীসহ মধ্যবয়সী যুবকরা। স্বল্প আয়তনের এই খেলাকে বিনোদন হিসেবে নেবার পাশাপাশি এটা এখন অন্যতম জুয়ায় পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এখন ভ্যান, রিক্সা, সিএনজি চালকেরাও এই জুয়ায় নিজেদের ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
২৬ নভেম্বর রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পৌরশহর ও পার্শ্ববতী ইউপিগুলোর প্রায় মুদি ও চায়ের দোকানগুলোতে অনবরত চলছে এ রকম ক্রিকেট জুয়া। এর মধ্যে জনৈক যুবক ও শিক্ষার্থী হাঁক ছাড়ছেন, এ ওভারের শেষের দুই বলে একটি ছক্কা হবে। কে বা কারা পক্ষে এবং বিপক্ষে বাজি ধরবেন। আর উপস্থিত বাজিকররা নির্দিষ্ট অংকে বাজি (জুয়া) ধরছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার পৌরশহরসহ ১১ ইউনিয়নের প্রায় জায়গাতেই চলছে এমন জমজমাট ক্রিকেট জুয়া। ক্রিকেট জুয়ার কারণে অনেকেই আবার নিঃস্ব হচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরা জড়িয়ে পড়ছে অল্প বয়সেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জুয়াড়ি জানান, টেলিভিশনের পর্দায় বিপিএল ক্রিকেট খেলা শুরুর আগেই বাজিকররা দুটি দলে বিভক্ত হয়। জয়-পরাজয়ের ওপর থাকে একটি বড় অংকের গ্রুপিং দান। এ ছাড়াও খেলা চলাকালে জুয়াড়িরা প্রতি ওভারে রান কত হবে, কিংবা এ ওভারে কে আউট হবে, নো-ওয়াইড বল হবে কিনা এইসব নিয়ে বাজি ধরে। সেখানে একজন বা দুইজন থাকে বিচারক হিসেবে। দেখা গেল এক ওভারে একটি নির্দিষ্ট রান হিসেব কষে টাকা ধরছে সর্বনিম্ন একশ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত।
তিনি আরও জানান, কোন কারণে বিদ্যুৎ চলে যেতে পারে বিষয়টি মাথায় রেখে তারা আরেক প্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছে। এ কাজে তারা থ্রিজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে মোবাইল ফোনে খেলা দেখার ব্যবস্থা রাখছে।
এ ব্যাপারে এক দোকান ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, সবার সামনেই এসব চলছে। কিন্তু কেউ এটাকে জুয়া ভাবছে না, খারাপও বলছে না। ড্রাইভার, ভ্যানচালক থেকে শুরু করে অনেক বিত্তবানদের শিক্ষিত ছেলেরাও এই খেলায় মেতে উঠেছে বলে তিনি জানান।
এরকম ক্রিকেট জুয়া বন্ধে প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে অনুরোধ জানান সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।