আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
প্রবাদ আছে, জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে, তিন বিধাতা নিয়ে। কথাটি অক্ষের অক্ষরে ফলে গেল মাল্লাপ্পা-র জীবনে। জন্ম থেকে দু’টি পা বিকল। তার সঙ্গে তিনি বামন। ফলে বহু কষ্ট করে তাকে জীবন কাটাতে হয়েছে। তার জন্যই বোধহয় জন্মেছিলেন শকুন্তলা। দেড় ফুটের স্বামীকে হাসি মুখে মেনে নিয়ে ঘরকন্যার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
গত কাল ভারতের কর্নাটকের সাম্ভাপুরের মল্লজা মন্দিরে এই অসাধারণ ঘটনার সাক্ষী থাকলেন দুই পরিবারের আত্মীয়-পরিজন এবং সাধারণ মানুষ। বিয়ের আসরে চেয়ারে বসে থাকা মাল্লাপ্পা-র মুখে তখন শিশুর হাসি। বয়স ৫০ ছুঁলেও সেই হাসি দেখে তাকে কিশোর বলে মনে হয়েছে। বছর আটত্রিশের শকুন্তলা নিজে ৫ ফুট লম্বা হয়েও ‘বেঁটে’ স্বামীকে মেনে নিয়েছেন হাসিমুখে। দু’ জনে যখন মালাবদল করেন তখন উপস্থিত মানুষ আনন্দে হাততালি দিয়ে ওঠেন।
বিয়ের আসরে বসা মাল্লাপ্পা-র মা কেঞ্চাম্মা জানান, তাদের অপরিমিত যুদ্ধের কাহিনি। অত্যন্ত দারিদ্র্য সত্ত্বেও ছেলের পড়াশোনায় যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তার দিকে সতর্ক দৃষ্টি ছিল কেঞ্চাম্মা-র। ছেলে হাঁটতে পারে না। তাই সব সময় তার সঙ্গে সঙ্গে থাকতেন মা। এ ভাবেই কলেজের গণ্ডি টপকে যান মাল্লাপ্পা। এর পর ছেলেকে নিয়ে থোনতাডা সিদ্দালিঙ্গা স্বামী মঠে যান কোঞ্চাম্মা। সেখানে গিয়ে নিজের অবস্থা জানিয়ে সাহায্য চান তিনি। সেখানেই চাকরির ব্যবস্থা হয় মাল্লাপ্পা-র। গত ১৩ বছর ধরে তিনি মঠ কমিটির হাইস্কুলে কর্মরত।
আগে হুইল চেয়ারে তাকে ঠেলে নিয়ে যেতে হতো। এখন একটি তিন চাকার স্কুটার কিনেছেন মাল্লাপ্পা। ফলে তার গতিবিধি এক দিক থেকে এখন স্বাধীন। মাল্লাপ্পা বলেন, ‘শকুন্তলা আমায় নতুন জীবন দিয়েছে। আমি ওর জন্য গর্ববোধ করি। যাদের অন্য মানুষের প্রতি সহানুভূতি রয়েছে তাদের সম্মান করা উচিত। স্বামীজির আশীর্বাদ সব সময় আমার সঙ্গে রয়েছে।‘
সূত্র : দেড় ফুটের বর,পাঁচ ফুটের কনে, দুরন্ত ’ছোটদের’ বিয়ে (এইসময়)