করিমগঞ্জে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যানদের অনাস্থা

কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা ।।

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। এ অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন উপজেলা পরিষদের দুই ভাইস চেয়ারম্যানও। বৃহস্পতিবার ৯ মার্চ উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে অনাস্থা প্রস্তাবে উপজেলার ১১জন ইউপি চেয়ারম্যানের সবাই স্বাক্ষর করেন।

অনাস্থা প্রস্তাবে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে অসহযোগিতা ও বাধা দেয়ার অভিযোগ আনা হয়। তাছাড়া অভিযোগে বলা হয়, উপজেলা চেয়ারম্যানের অসহযোগিতার কারণে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি), টিআর, কাবিটার প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। টিআর কর্মসূচির প্রায় ৪০ লাখ ও কাবিটা কর্মসূচির ৪৫ লাখ টাকা প্রকল্পের অনুমোদন না পাওয়ায় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।

ইউপি চেয়ারম্যানদের অভিযোগ, গত নভেম্বর মাসে এডিপির বরাদ্দ এলেও কেবল উপজেলা চেয়ারম্যানের অসহযোগিতায় বরাদ্দের অনুকূলে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। প্রকল্পের মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ তাদের প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

তবে উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিয়ম হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের রেজুলেশনসহ প্রকল্প জমা দেয়া। কিন্তু আমার কাছে রেজুলেশন ছাড়া প্রকল্পগুলো পাঠানো হয়। এসব অন্যায় বা বে-আইনি কাজ করিনি বলেই সম্ভবত এ অনাস্থা। তিনি উল্টো অভিযোগ করে বলেন, প্রকল্পের ব্যাপারে আমি ইউপি চেয়ারম্যানদের চিঠি দিয়ে তাগিদ দিয়েছি, পিআইওকে নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু আমার কাছে গত পরশুদিন এসব পাঠানো হয়, তা-ও রেজুলেশন ছাড়া। তিনি এ ঘটনায় ইউএনওর ইন্ধন রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।

জানা গেছে, উপজেলায় বিভিন্ন বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রকল্প গ্রহণ, অনুমোদন ও বাস্তবায়নের যেসব কমিটি রয়েছে, সেগুলোর সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান। তার স্বাক্ষরে এগুলোর অনুমোদন ও বাস্তবায়ন হয়ে থাকে।

কিরাটন ইউপি চেয়ারম্যান ইবাদুর রহমান শামীম বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের অসহযোগিতার কারণে ইউনিয়নগুলোতে কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ উপজেলা পরিষদের স্বাভাবিক কাজকর্মও ব্যাহত হচ্ছে। তাই আমরা বাধ্য হয়ে অনাস্থা প্রস্তাব করেছি। গুনধর ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল সাকির ও জয়কা ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন জানান, পরিষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব গৃহিত হয়েছে।

করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আছমা আরা বেগম অনাস্থা প্রস্তাবের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের অসহযোগিতা ও ক্ষেত্র বিশেষে বাধার কারণে উন্নয়ন কাজগুলো বাস্তবায়ন করা যাচ্ছিল না। এসব কারণে ইউপি চেয়ারম্যানরা অনাস্থা দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি এ অনাস্থা প্রস্তাব ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।

Similar Posts

error: Content is protected !!