আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে কমপ্লেক্স ভবন নেই। চেয়ারম্যান পরিবর্তনের সাথে সাথে কার্যালয়েরও মিলে নয়া ঠিকানা। ফলে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা পেতে ইউনিয়ন ৩টির প্রায় ৫০ হাজার অধিবাসী নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
ইউনিয়নগুলো হলো নিকলী সদর, ছাতিরচর ও সিংপুর। এই ৩টির মধ্যে আবার সিংপুর ও ছাতিরচর ইউনিয়নের নেই নির্ধারিত পরিষদ কার্যালয়।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জের ২য় প্রাচীন নিকলী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন রয়েছে। নিকলী সদরসহ সিংপুর ও ছাতিরচর ইউনিয়ন ৩টির পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নেই। খোদ নিকলী সদর ইউনিয়ন পরিষদটিই পুরান বাজারে ৬ শতাংশ ভূমির ওপর ছোট ছোট সেমিপাকা ৩টি ঘরে কোনোরকম চালাচ্ছে কার্যক্রম। ১টি ঘরে ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্র, ১টি গুদাম ঘর ও অপরটি গ্রাম আদালত। চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সচিবের বসবার নির্ধারিত কোনো ঘর নেই। গুদাম ঘরটির বর্ধিত একচালায় সচিব বসলেও চেয়ারম্যান বা মেম্বারগণ গাদাগাদি করে গ্রাম আদালতের এক কোণেই তাদের কাজকর্ম সারতে হচ্ছে। ছোটখাটো সালিশ, দরবার বা সভা-সমাবেশেও স্থান সংকুলান হয় না।
মহিলা সদস্য বা সাধারণের জন্য আলাদা কোনো টয়লেট ব্যবস্থা নেই। মাত্র ১টি টয়লেটেই চেয়ারম্যান, মেম্বারদের শৌচকর্ম সারতে হচ্ছে।
এদিকে ছাতিরচর ও সিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের আরো করুণ দশা। ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স তো দূরের কথা, নেই নির্ধারিত কোনো কার্যালয়ও। যখন যে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তার সুবিধামতো স্থানেই চালাচ্ছেন পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম। জরুরি খাতাপত্র নিয়ে সচিব, মেম্বার ও ইউনিয়নবাসীকে দৌড়াতে হচ্ছে চেয়ারম্যানের পেছন পেছন।
এ ব্যাপারে নিকলী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কারার বোরহান উদ্দিনের বরাত দিয়ে ৪ বারের নির্বাচিত মেম্বার জসিম উদ্দিন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের জন্য কমপক্ষে ২৫ শতক নিজস্ব ভূমি দরকার। আমাদের ছিল ৬ শতক। তাই এতদিন কমপ্লেক্স ভবন হয়নি। এখন নিকলী স্টেডিয়ামের পাশে ৩০ শতাংশ জায়গা নেয়া হয়েছে। শিগগিরই কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন পাঠানো হবে।
সিংপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল হক জানান, প্রায় ৭ বছর আগেই কমপ্লেক্স ভবন হয়ে যেত। আগের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম তার সুবিধাজনক স্থান না হওয়ায় হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দিয়ে ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেন। বর্তমানে পরিষদের জন্য নির্ধারিত স্থানটিও ধনু নদীর ভাঙ্গনের কবলে। নতুন জায়গা নির্ধারণ ও রিট আবেদনটি খারিজের চেষ্টা করছি। কিভাবে কার্যক্রম চলছে? এমন প্রশ্নে তিনি সিংপুর বাজার ও তার ভাটিবরাটিয়া গ্রামের বাড়িতেই কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলে জানান।
ছাতিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন জানান, ২০ শতাংশ ভূমির ওপর আমাদের একটা টিনের ছোট ঘর আছে। মাত্র একটি কক্ষের ঘর হওয়ায় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। নিজ বাড়ি, মাঠে-ময়দানে বিচার, সালিশসহ নানাবিধ কার্যক্রম চলছে। আগের চেয়ারম্যানরাও এভাবেই পরিষদ চালিয়েছেন। যা একটি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমের জন্য সুবিধাজনক এবং শোভনীয় নয়। ইউনিয়নবাসীকে নিয়ে পরিষদ ভবন কমপ্লেক্স নির্মাণের বাকি ভূমি ক্রয়ের সিদ্ধান্তের সভা শিগগিরই করা হবে বলে জানান।
সূত্র : নিকলীর ৩ ইউনিয়নে কমপ্লেক্স ভবন নেই (মানবজমিন)