মৃত্যুর কবল থেকে যেভাবে রক্ষা পেলাম আমরা ১০জন

এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিত্যদিনের পারাপার

দিলীপ চন্দ্র বর্মন ।।

গত ২৭ জুন ২০১৭ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নে বেড়াতে যাই। বর্ডার এলাকা হওয়ায় পাহাড়ের কয়েকটি টিলায় ঘুরাঘুরি করার জন্য রওনা হই। হঠাৎ সালদা নদী পারাপারের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় রেললাইন দিয়ে পার হতে হবে।

স্টেশনটিতে ট্রেন আসা-যাওয়ার কোনো সিগনাল বা সংকেত নেই। তাই ওই জায়গার কয়েকজনকে জিজ্ঞাসার পর বলল এখন কোনো ট্রেন নেই।

নদীটির উত্তর পাশে রেললাইনে বাঁক থাকায় সেতু পারাপারের সময় ট্রেন আসছে কি না, তা বোঝা যায় না। আমরা ছোট-বড় মোট ১০জন সেতুটি পাড় হওয়ার জন্য সেতুটির মাঝামাঝি যাওয়া মাত্রই উত্তর দিক থেকে একটি ট্রেন আসছে জানাল আমাদের মাঝে থাকা বিশাল বর্মন (১০)। তখন সবাই জীবন বাঁচানোর চেষ্টায় দৌড়ঝাপ শুরু করি।

সফরসঙ্গী কয়েকজনের সাথে ভ্রমণকালীন লেখক (বাঁয়ে)

৫জন পার হতে সক্ষম হই আর ৪ জন পিছিয়ে যায় ও অন্য ১জন নিচে লাফ দিয়ে জীবন বাঁচায়। ঈশ্বরের কৃপায় কারো কোনো বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি।

আমাদের দেখতে দুই পাশ থেকে শত শত মানুষের ভিড়। পরে জানতে পারলাম ওই স্টেশনে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী জালালাবাদ এক্সপ্রেস, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী এবং চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী কর্ণফুলী ট্রেন দুটি এ স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে। এখানে স্টেশন থাকলেও কোনো মাস্টার নেই। মাত্র একজন কর্মচারী দিয়ে চলছে স্টেশনের কার্যক্রম। ফলে এ স্টেশনে কোনো টিকিট বিক্রি হয় না।

সালদা নদী রেলস্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী বলেন, নদীটি পারাপারের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে স্টেশনে যাতায়াত করতে হয় এবং প্রতি বছরই সেতুতে দুর্ঘটনায় মানুষ ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। কিন্তু আমরা সবাই নতুন জীবন নিয়ে বাড়ি ফিরলাম।

Similar Posts

error: Content is protected !!