আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
ব্রিটিশ রাজপরিবারে জীবনযাপনের সবকিছুতে স্বাভাবিকভাবেই থাকে রাজকীয় ছোঁয়া। আর রানি এলিজাবেথ বলে কথা! সকালে ঘুম থেকে উঠে রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে তাঁর সারাটা দিন কেটে যাওয়ারই কথা— এমনটা ভাবলে কিন্তু ভুল করবেন।
খাওয়াদাওয়ার বিষয়টিই ধরা যাক। খাবার পরিবেশনে পরিপাটি ভাব থাকলেও বাড়াবাড়ি থাকে না। রানির তিন বেলার খাওয়া নাকি খুবই সাধারণ। রাজপরিবারের হেঁশেলের সাবেক রাঁধুনি ফেরেন ম্যাকগ্র্যাডি বলেছিলেন, রানি খান বাঁচার জন্য। তিনি একেবারেই ভোজনরসিক নন। বরং প্রিন্স ফিলিপ খেতে খুব পছন্দ করেন। তিনি সারা দিন ধরে খাবার নিয়ে কথা বলে যেতে পারবেন। খাওয়ার বিষয়ে রানি এলিজাবেথ বেশ নিয়মনীতি মেনে চলেন। রানির খাবারে কোনো রকম শর্করা (স্টার্চ) থাকতে পারবে না। আলু, পাস্তা, ভাতকে কিছুটা এড়িয়েই চলেন তিনি।
ব্রিটিশ পত্রিকা টেলিগ্রাফ-এর তথ্য অনুসারে প্রধান পাচক মার্ক ফ্লানাগান বলেন, সপ্তাহে দুই দিন রানিকে খাবারের তালিকা দেন। তারপর টিক চিহ্ন দিয়ে দেন পছন্দের খাবারগুলোতে। যেগুলো খান না, সেগুলো পড়ে যায় কাটা চিহ্নের ভেতরে।
রানির দিন শুরু হয় বোন চায়না কাপে আর্ল গ্রে চায়ে চুমুক দিয়ে। সঙ্গে থাকে বিস্কুট। সকালের নাশতায় থাকে সিরিয়াল ও ফল। কেলগসের স্পেশাল কেক, কোয়েকার ওটস ও উইটাবিক্স আছে পছন্দের তালিকায়। রানি টাপারওয়ারের ডিব্বা থেকেই সিরিয়াল নিয়ে খেতে পছন্দ করেন।
মাঝেমধ্যে স্বাদ বদলাতে টোস্ট আর মারমালেড তুলে নেন পাতে। রাজপরিবারে খাওয়ার এই জেলি আসে উইকিন অ্যান্ড সনস থেকে। কোনো বিশেষ দিনে হয়তো বেছে নেন স্ক্র্যামবলড স্টাইলে করা ডিম (ব্রাউন এগ)। সঙ্গে থাকে স্মোকড স্যামন ও ট্রাফেল।
দুপুরের খাবারের আগে জিন ও ডাবোনেট মেশানো পানীয়তে একটি লেবুর টুকরা দিয়ে পান করেন। দুপুরের খাবার হয় খুবই সাধারণ। মাছের সঙ্গে সবজি। তবে সাধারণ মুরগির গ্রিলের সঙ্গে সালাদও রানির বেশ পছন্দ।
প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় বিকেলে এক কাপ চা আবশ্যক। সেটাতে কিছুটা রাজকীয় ব্যাপার থাকে। শসা, স্মোকড স্যামন, ডিম, মোয়োনেজ দিয়ে তৈরি ফিংগার স্যান্ডউইচ বৈকালিক চাকে সঙ্গ দেয়। এ ছাড়া পয়সার আকারে করা রাসবেরি জ্যাম স্যান্ডউইচও বেশ পছন্দ তাঁর। ম্যাকভিটিস রিচ টি বিস্কুট, স্কোনস ছাড়াও রানির পছন্দের বিভিন্ন স্বাদের কেক পরিবেশন করা হয়।
গরুর ফিলে, ফেসেন্ট, ভেনেসান অথবা স্যামন মাছের পদ থাকে রাতের খাবারে। সেসবের সঙ্গে পরিবেশন করা হয় স্টেক। এর বাইরে মাঝেমধ্যে তিনি বেছে নেন ওয়েল ডান সানডে রোস্ট।
চকলেট মুস, চকলেট গানাচে স্পঞ্জ কেক, স্ট্রবেরি, ভালো মানের চকলেট, সাদা পিচ ইত্যাদি রেখে দেন মিষ্টান্নের তালিকায়। দিন শেষ করেন ভালো মানের এক গ্লাস শ্যাম্পেন দিয়ে। সূত্র: দ্য ইনডিপেনডেন্ট
সূত্র : ব্রিটেনের রানির খাওয়াদাওয়া [প্রথম আলো, ৫ আগস্ট ২০১৭]