আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
শিশুর জন্মের পর অনেক মায়ের পেটের ত্বকে লম্বা লম্বা দাগ হয়। যা কিছুটা হলেও সৌন্দর্যে ব্যাঘাত ঘটায় এবং মায়েদের কষ্ট দেয়। তবে গর্ভাবস্থায় কিছুটা সচেতন হলে আগের মতোই দাগহীন পেট রাখা সম্ভব।
নারীর পেট
একজন মা প্রায় ৪০ সপ্তাহ ধরে তাঁর সন্তানকে প্রায় দুই লিটার পানিসহ গর্ভে ধারণ করেন। তাছাড়া তখন জরায়ুর আয়তন আগের চেয়ে ২০ গুণ বড় হয়। তবে মেয়েদের পেটের ত্বকের টিস্যু এমনভাবে তৈরি যে, তা ধীরে ধীরে রাবারের মতো ঢিলা বা বড় হতে পারে।
এর কারণ
গর্ভে থাকা সন্তানের আকার বড় হওয়ার সাথে সাথে পেটও বড় হতে থাকে। ফলে তখন স্বাভাবিকভাবেই পেটে টান পড়ে। এতে পেটে প্রথমে লালভাব পরে নীল হয়ে যাওয়া ফাটা দাগ দেখা দেয়। এই দাগ শিশুর জন্মের আগে সাধারণত পেট, ঊরু ও নিতম্বে হয়। তবে এমনটা যে সবার ক্ষেত্রেই হয় তা কিন্তু নয়। এর পেছনে কিছুটা বংশগত কারণও থাকতে পারে।
পেটকে দাগমুক্ত রাখতে যা করণীয়
গর্ভবতী থাকাকালীন স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। অর্থাৎ খাবারের তালিকায় থাকতে হবে শস্যদানাযুক্ত খাবার, মাছ এবং বিভিন্ন সবজি। যেমন ব্রোকলি, গাজর এবং ভিটামিন ‘ই’ ও ‘সি’ যুক্ত খাবার। তাছাড়া চিনিবিহীন চা এবং প্রচুর পানি পান করতে হবে।
নিয়মিত হাঁটাচলা
হাঁটাহাঁটি করলে শরীরে সঠিকভাবে রক্ত সঞ্চালন হয়। ফলে ত্বক দাগ হওয়া থেকে রক্ষা পেতে পারে। গর্ভবতীরা ‘ইয়োগা’ বা যোগ ব্যায়ামের মতো হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। তবে মা ও শিশুকে সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে সাঁতার কাটা।
‘ঠাণ্ডা-গরম’ শাওয়ার
প্রথমে ঠাণ্ডা, পরে গরম, আবার ঠাণ্ডা – এভাবে শাওয়ার নিলে ত্বকে ব্লাড সার্কুলেশন ভালোভাবে হয়। গর্ভধারণের শুরু থেকেই এমনটা করা উচিত। প্রতিদিনই গোসল করার সময় পেট, নিতম্ব, ঊরু ও স্তনে আলাদা আলাদাভাবে ঠাণ্ডা-গরম-ঠাণ্ডা পানির শাওয়ার নিতে হবে। মনে রাখতে হবে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিয়েই গোসল শেষ করতে হবে। গোসলের সময় শরীর হালকাভাবে মাসাজ করলে ত্বকে দাগ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।
তেলের মাসাজ
পেটের সন্তানের জন্ম যাতে সহজভাবে হয় সেজন্য গর্ভবতী নারীদের পেটে তেল মালিশ করার প্রচলন এশিয়ার দেশগুলোতে বহু আগে থেকেই চলে আসছে। তবে জার্মান ফার্মাসিস্ট তানিয়া ফ্রানৎস বলছেন, সবচেয়ে ভালো হয় যদি প্রতিদিন দুই বেলা সুগন্ধি বা রাসায়নিক পদার্থ ছাড়া তৈরি বাদাম তেল মালিশ করা হয় পেটে এবং তার আশেপাশে। কারণ বাদাম তেল ত্বককে মসৃণ ও সুন্দর রাখে।
আস্তে আস্তে মালিশ করতে হবে
হাতে তেল নিয়ে খুব ধীরে ধীরে প্রথমে নাভি থেকে শুরু করে পেটের চারিদিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মালিশ করতে হবে। মনে রাখতে হবে কোনোভাবে যেন পেটে চাপ না লাগে। কিছুক্ষণ পর শুধু বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তর্জনি দিয়ে খুব মোলায়েমভাবে নাভি থেকে ওপরের দিকে ঘোরাতে হবে। তানিয়া জানান, এভাবে নিয়মিত যত্ন নিলে শতভাগ না হলেও পেট অনেকটাই দাগমুক্ত রাখা সম্ভব।
সূত্র : গর্ভাবস্থার ফাটা দাগ দূর করার পাঁচ উপায় [ডয়চে ভেলে, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭]