প্রেম প্রত্যাখ্যান : কিশোরগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় সহপাঠীকে ছুরিকাঘাতকারী আটক

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ছুরিকাঘাতকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইমরান (২১) পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাজিতপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আবু শামা মো. ইকবাল হায়াত, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আরিফুর রহমান ও পরিদর্শক (ইন্টিলিজেন্স) এসএম শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশের একটি বিশেষ দল এই গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেয়।

গ্রেপ্তার হওয়া ইমরান কিশোরগঞ্জের ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিবিএ শেষবর্ষের শিক্ষার্থী এবং শহরের নগুয়া হাসমত উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় এলাকার বাসিন্দা রতন মিয়ার ছেলে।

অন্যদিকে আহত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর নাম সৈয়দা ইলমী সুলতানা (২১)। সে ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং শহরের হারুয়া এলাকার অ্যাডভোকেট সৈয়দ সেলিম জাহাঙ্গীরের মেয়ে। এ ঘটনার পর ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় ইমরানকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেন।

মামলা দায়েরের পর পরই অভিযুক্ত ইমরানকে গ্রেপ্তারে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান শুরু করে। অভিযানের এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর পরিবার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আহত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে একই সেমিস্টারে পড়ার সুবাদে ইমরান ও ইলমীর পরস্পরের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয়। এই পরিচয়ের সূত্র ধরে দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাস ছয়েক ধরে ইমরান প্রায়ই ইলমীকে প্রেমের প্রস্তাবসহ নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতো। কিন্তু ইলমী তাতে পাত্তা না দিয়ে নানা কৌশলে ইমরানকে এড়িয়ে চলতো।

শনিবার দুপুরে শহরের নীলগঞ্জ রোড এলাকার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। অপ্রীতিকর এই ঘটনার পর ইলমী বাসার উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে রিকশাযোগে বের হলে ইমরান তার পিছু নেয়। শহরের শোলাকিয়া চৌরাস্তা নীলগঞ্জ মোড় এলাকায় ইমরান জোর করে ইলমীর সঙ্গে রিকশায় চেপে বসে।

রিকশাটি কিছুদূর এগোনোর পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের খরমপট্টি এলাকার ভূমি অফিস সংলগ্ন সড়কে ইমরান তার সাথে আনা ছুরি দিয়ে ইলমীর মুখ ও ঘাড়ে উপর্যুপরি আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে। রক্তে ইলমীর পরনে থাকা শাড়ি রক্তাক্ত হয়ে যায়। এ সময় রিকশাচালকের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে ইমরান পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় এলাকাবাসী ইলমীকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে ইলমীর বাবা-মা ও আত্মীয়স্বজন ছাড়াও ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার চৌধুরী খায়রুল হাসান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে ছুটে যান।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আবু শামা মো. ইকবাল হায়াত জানান, এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

সূত্র : ছাত্রীকে ছুরিকাঘাতকারী সেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র গ্রেপ্তার  [কিশোরগঞ্জ নিউজ, ১১ মার্চ ২০১৮]

Similar Posts

error: Content is protected !!