হোসেনপুরে দুই বছরের ছেলে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা

হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা ।।

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে পারিবারিক কলহের জের ধরে মা দুই বছরের ছেলেকে গলাটিপে হত্যার পর নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গত মঙ্গলবার (৩১ জুলাই ২০১৮) সন্ধ্যায় উপজেলার জিনারি ইউনিয়নের হলিমা গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় নিহত শিশুটির মা সাবিকুন্নাহারকে (২৩) গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় সবুজ মিয়া বাদী হয়ে বুধবার হোসেনপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সাবিকুন্নাহারকে আসামি করা হয়েছে। তিনি ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার নাগপুর গ্রামের আবুল ফজলের মেয়ে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ছেলে কায়সারকে (২) গলাটিপে হত্যা করে ঘরের মধ্যে নিজের গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সাবিকুন্নাহার। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্বামী রাজমিস্ত্রি সবুজ মিয়া তখন বাড়িতে ছিলেন না। সন্ধ্যার দিকে তিনি বাড়িতে গিয়ে দরজা জানালা বন্ধ দেখতে পান। তখন তিনি ঘরের ভেন্টিলেটর ভেঙে তার স্ত্রীকে সিলিং ফ্যানে ঝুলতে এবং ছেলে কায়সারকে মৃত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তিনি নিজেই ফ্যানে ঝুলন্ত স্ত্রীকে অজ্ঞান অবস্থায় নিচে নামান।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় এবং আহত সাবিকুন্নাহারকে হোসেনপুর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে তাকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

হোসেনপুর সার্কেলের এএসপি মো. আরাফাতুল ইসলাম জানান, সাবিকুন্নাহারকে আজ (১ আগস্ট ২০১৮) আদালতে পাঠানো হচ্ছে, সেখানে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেবেন বলে রাজি হয়েছেন। এর পর তার জবানবন্দি ধরে পুলিশ পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামবে।

স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চার বছর আগে সবুজ মিয়ার সঙ্গে সাবিকুন্নাহারের বিয়ে হয়। তাদের একমাত্র সন্তান ছিল কায়সার। সূত্র জানায়, সাবিকুন্নাহারকে তার স্বামী ছাড়া অন্যরা মানসিকভাবে নির্যাতন করত। এসব নিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল ওই নারী। হয়ত এ অশান্তির কারণে সন্তান হত্যা করে নিজে মরতে চেয়েছিল সাবিকুন্নাহার।

হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল হোসেন জানান, সাবিকুন্নাহারের সঙ্গে তার স্বামীর সম্পর্ক ভালই ছিল। কিন্তু ওই নারীর সঙ্গে তার শাশুড়ি ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সম্পর্ক তেমন ভাল ছিল না শোনা যাচ্ছে। তবে বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশ। তদন্ত না করে প্রকৃত কারণ বলা যাচ্ছে না। শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Similar Posts

error: Content is protected !!