আবদুল্লাহ আল মহসিন ।।
হিজরী ১৪৩৯ বর্ষ বিদায় হয়ে গেছে। শুরু হয়েছে ১৪৪০ হিজরী বর্ষ। হিজরী বর্ষ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় অতীতের এক মহা ঘটনার। সে ঘটনায় রয়েছে আমাদের মুসলিম চেতনার বিকাশ।
অতীতের সেই ঘটনা আজকের দিনেও আমাদের প্রেরণা যোগায়। মুসলিম উম্মাহ এর মাধ্যমেই চমকে ওঠে। সেই ঘটনা হলো রাসুল সাঃ-এর হিজরত। মক্কায় যখন রাসুলুল্লাহ ও সাহাবাদের জীবন দূর্বিসহ হয়ে ওঠে। জুলুমের শিকার হন তখন এক রাতের আঁধারে মুহাম্মদ সাঃ ও তাঁর সাথী আবু বকর রাঃ মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। সে দিন ছিল ৬২২ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জুলাই।
এর মাধ্যমে ১৩ বছরের মক্কী জীবনের অধ্যায় সমাপ্ত হয়। হিজরী বর্ষের প্রবর্তন করেন হযরত ওমর ফারুক রাঃ। তাঁর খেলাফতকালে রাষ্ট্রীয় দাপ্তরিক চিঠিপত্রে শুধুমাত্র দিন ও মাসের নাম লিখা থাকতো। এতে বছর গণনায় সমস্যা হতো। রাষ্ট্রীয় কাজে বিঘ্ন ঘটতো। সাহাবী আবু মুসা আশআরী রাঃ বিষয়টি সর্বপ্রথম ওমর রাঃ-এর নজরে আনেন।
হযরত ওমর রাঃ গুরুত্বপূর্ণ সাহাবীদের নিয়ে মজলিসে সূরার পরামর্শে হিজরী সনের প্রবর্তন করেন। এই ঘটনা ঘটেছিল হিজরতের ১৭ বছর পর। এর পর থেকে মুসলিম খিলাফতকালে সকল খলিফা মরক্কোর রাবাত থেকে নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা পর্যন্ত হিজরী গণনা শুরু হয়।
বর্তমানে খিলাফত ব্যবস্থা না থাকলেও হিজরী গণনা তার জৌলুস হারায়নি। পৃথিবীর যে ভূখণ্ডেই মুসলিম বসতি গড়ে ওঠেছে সেখানেই হিজরী গণনা আছে। হিজরী বর্ষ হলো চন্দ্র নির্ভর গণনা। আর চাঁদের সাথে মুসলমানদের অনেক ইবাদাত কর্মের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক।
আমাদের সিয়াম, হজ্জ, ঈদ চন্দ্রনির্ভর ইবাদাত। তাই বলা যায় মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ও সামাজিক রীতি-নীতি এখনো চন্দ্রনির্ভর। হিজরী মাসের শুভ সূচনা হয় মহরম মাসের মাধ্যমে। প্রায় প্রতিটি হিজরী মাসেই রয়েছে মুসলিম চেতনা।