আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
হিরো আলম। সমসাময়িক আলোচনার শীর্ষে এই সেলিব্রেটি। পুরো নাম আশরাফুল হোসেন আলম। ছোটবেলা থেকে নাচ গান আর অভিনয়ের সাথে সম্পর্ক। পরবর্তীতে নিজেই ছোট ছোট অনুষ্ঠানে অভিনয় করে হিরো নামে খ্যাতি পান। বর্তমানে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে নির্বাচন করতে চাওয়ায় দেশজুড়ে আলোচনার শীর্ষে আসেন তিনি।
হিরো আলমের বাড়ি বগুড়া সদরের এরুলিয়া ইউনিয়নের পলিবাড়ীতে। এটি তার পালক বাবার বাড়ি। আর আপন বাবা-মায়ের বাড়ি একই গ্রামের পশ্চিমপাড়ায়। হিরো আলমের বয়স যখন ১০-১২ বছর তখন থেকে তার পালক বাবা আব্দুর রাজ্জাক তাকে লালন পালনের দায়িত্ব নেন। অতি গরিব ঘরে জন্ম নেয়া হিরো আলমের বাবা আহম্মদ আলী বাড়িতে চানাচুর, আঁচার বানাতেন। সেই চানাচুর এবং আঁচার গ্রামে গ্রামে বিক্রি করতেন হিরো আলম এবং তার বাবা।
পরবর্তীতে বাবা আরেকটি বিয়ে করলে বাড়িতে অভাব অনটন এবং অশান্তির কারণে পালক বাবার কাছে চলে যান তিনি। সেখানে গিয়ে ৭ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পরে ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যবসা এবং মিউজিক ভিডিও’র সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন হিরো আলম।
২০০৭ সালে পার্শ্ববর্তী গ্রামের শাহপাড়ার মেয়ে সুমীর সঙ্গে বিয়ে হয় আলমের। হিরো আলমের বড় মেয়ে আলোমনি দ্বিতীয় শ্রেণী, মেজো মেয়ে আঁখি ১ম শ্রেণির ছাত্রী এবং ছেলে আবিরের বয়স চার বছর। তিন সন্তান ও স্ত্রী সুমীকে নিয়েই সংসার। হিরো আলমের মতো সুমীরও দাবি, তার সুখের সংসার।
হিরো আলমের স্ত্রী সাবিহা আক্তার সুমির কাছে প্রশ্ন ছিল আশরাফুলের হিরো হিসেবে খ্যাতি পাওয়ার পেছনে তার অবদান কতটুকু। উত্তরে সুমি বলেন, ডিসের ব্যবসার পাশাপাশি মিউজিক ভিডিও নিয়ে পড়ে থাকতেন তিনি। আলম খোলা মনের মানুষ। সারাদিনে যা-যা ঘটে সবকিছুই রাতে খুলে বলতেন, সমঝোতা ছিল ভালো। তিনিও উৎসাহ দিতেন এসব কাজে।
অন্য মেয়ে নিয়ে নাচানাচি আপনার মনে কষ্ট দেয় না এমন প্রশ্নের উত্তরে সুমি বলেন, ‘এটি তো তার ক্যারিয়ার, ব্যবসা। এর সঙ্গে সংসার জীবনে কোনো প্রভাব এখনো পড়েনি।”
সংসারের খরচ চালানো নিয়ে সুমী বলেন, ‘ডিশ ব্যবসার সমস্ত হিসাব কিতাব আমি দেখি। মাসে খরচ বাদে ৫০ হাজার টাকার মতো থাকে তা দিয়েই সংসার বেশ ভালোই চলে। লাইনের কোনো সমস্যা হলে কাজের লোক দিয়ে আব্বাকে (শ্বশুর) পাঠাই। ডিশ ব্যবসায় হেল্প করার জন্য আমাদের এখানে মোট ৮ জন লোক কাজ করে। আলম না থাকলেও আমরা সবকিছু সামলে নেই।’
তার আপন বাবার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেলো, তার মা মনোয়ারা বেগম জীর্ণ মাটির ঘরে তালা দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে গেছেন। এছাড়া আলমের সৎ মা-ও ছিলেন না বাড়িতে। আর হিরো আলমের আপন বাবা আহম্মদ আলী মারা গেছেন দেড় বছর আগে।
চাচাতো ভাবী মমতাজ বেগম জানালেন হিরো আলমের ছোটবেলার কষ্টের কথা।
ভাবী বলেন, ছোটবেলা খুব কষ্ট করে চলেছে। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। এরপর থেকে আচার, চানাচুর বানিয়ে চলত, পরে ডিশ লাইন থেকে নাচগানে চলে গেল। এখন এমপিতে দাঁড়াচ্ছে। আমরাও চাই পাস করুক। ভালো কিছু করুক।’
হিরো আলম ৪ ভাই বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। তার বড় বোনের নাম মিনি বেগম এবং ছোট দুই বোন রিনি এবং রঞ্জনা।
সূত্র : সময় নিউজ, ২২ নভেম্বর ২০১৮