আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
যে চোখ একদিন প্রাণাধিক ছেলের সুখ-শান্তির স্বপ্ন দেখত, জন্মদাত্রী মমতাময়ী মায়ের সেই দু’চোখে এখন কান্নার ধারা। সম্পদলোভী একমাত্র ছেলে জমিজমা লিখে নিয়ে মারধর করে মাকে ফেলে দিল রাস্তায়।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার অশীতিপর বিধবা মা আমেনা বেগমের ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. গোলাম মোক্তাদির জানান, বৃদ্ধার পিঠ ও ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা ও জখম ছিল। খবর পেয়ে পাকুন্দিয়া থানার ওসি মফিজুর রহমান হাসপাতালে গিয়ে আমেনা বেগমের খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেবেন।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার সুখিয়া ইউনিয়নের কুর্শ্বাকান্দি গ্রামের সচ্ছল কৃষক আখতার উদ্দিন। স্ত্রী আমেনা বেগম এবং দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে রেখে মারা গেছেন কয়েক বছর আগেই। বেঁচে থাকতে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।
ছেলে নূরুল ইসলাম হয়ে ওঠে মায়ের বাঁচার একমাত্র অবলম্বন। বিয়ের পর মায়ের সম্পদের ওপর নজর পড়ে নূরুল ইসলামের। এক পর্যায়ে বোনদের বঞ্চিত করে কৌশলে মা’র পাঁচ কাঠা সম্পত্তি লিখে নেয় সে। ধীরে ধীরে মায়ের স্নেহ-মমতার বন্ধনে ছেলের মনে মরচে ধরতে থাকে। আমেনা বেগম হয়ে ওঠেন ছেলের সংসারে গলগ্রহ।
কারণে অকারণে তার ওপর নেমে আসে ছেলে ও ছেলেবধূর নির্যাতনের খড়গ। শেষ আশ্রয় ও ছেলের সুখের কথা ভেবে সবকিছু নীরবে সয়ে যান। সর্বশেষ ১ সেপ্টেম্বর গর্ভজাত সেই সন্তান তাকে নির্দয়ভাবে মারধর করে রাস্তায় ফেলে দেয়।
রোববার রাতে কুর্শ্বাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা সুখিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ললিতা আক্তার এ ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় সামাজিকভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করবেন বলে জানান।
সূত্র : যুগান্তর