ভাই খুন, প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে গিয়ে বাদী গ্রেফতার

সংবাদদাতা ।।
চাচাত ভাই লোকমান (৪৫)কে মদের সাথে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে খাইয়ে খুন করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আর শেষ অবধি নিজেই ফেঁসে গেলেন খুনের মামলার বাদী দামপাড়া ইউনিয়নের দামপাড়া নয়াহাটি গ্রামের জামির উদ্দিনের ছেলে মোঃ হাবিব (৪২)। খুনের সাথে জড়িত মোঃ হাবিব, মোঃ শফিক উদ্দিন (২৮), চাচা মিয়া হোসেন (৫৫) ও নিজাম উদ্দিন (৩৫)কে গত রোববার গ্রেফতার করেছে নিকলী থানা পুলিশ। গতকাল সোমবার সকালে খুনের মূল পরিকল্পনাকারী মোঃ হাবিব সাংবাদিকদের সামনে থানায় খুনের ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে অষ্টগ্রাম সার্কেল এএসপি মোঃ শহিদুল ইসলাম নিকলী থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মকবুল হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে একদল পুলিশ হাবিবকে সাথে নিয়ে হাবিবের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার ঘরের একটি ট্রাংক থেকে খুনে ব্যবহৃত ১টি দা, ১টি চাপাতি, ১টি ছুরি ও একটি লাঠি উদ্ধার করেন। এসময় এলাকার শত শত নারী পুরুষ হাবিবের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগানে মিছিল করতে থাকলে পুলিশ জনতাকে বুঝিয়ে মিছিলটি নিয়ন্ত্রণে আনেন। মিছিলকারীদের পক্ষে সুমন মাহমুদ এই প্রতিনিধিকে জানান, তারা এলাকার এমন কয়েকটি খুনের ঘটনার সাথে জড়িত। নিজে খুন করে প্রতিপক্ষকে মামলা দিয়ে হয়রানি করে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসির দাবী জানাই।

michil_8-3-16
মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এবছরের ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে দামপাড়া নয়াহাটি গ্রামের একটি সবজিক্ষেতে আমীর আলীর ছেলে লোকমান (৪২)কে খুন করে ক্ষত-বিক্ষত লাশ ফেলে রাখে। পরদিন সকালে নিকলী থানা পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে। এসময় লাশ দেখতে এসে বাদী মোঃ হাবিবের ইশারায় প্রতিপক্ষ মৃত ফিরোজ আলীর ছেলে মাসুদ (৪২), নাজু (৩৫) ও ফজল (২৭)কে গ্রেফতার করে। পূর্বশত্রুতার জের ধরে গ্রেফতারকৃত ৩জনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মৃতের চাচাত ভাই মোঃ হাবিব বাদী হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি নিকলী থানায় একটি খুনের মামলা দায়ের করে। খুনের ঘটনার পরদিন থেকে মামলার ৪ নং সাক্ষী পূর্বপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে নিজাম উদ্দিন (৩৫) বাড়িছাড়া হয়। খুনের ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে গত ৬ মার্চ রোববার ভোর বেলা সিলেট জেলার শাহপরান থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করে। ঐদিন দুপুর বেলা জুডিশিয়াল সিনিয়র ম্যাজিষ্ট্রেট শাহদাত হোসেন এর আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয় নিজাম উদ্দিন। জবানবন্দিতে বলেন, এ হত্যার ঘটনায় বাদী মোঃ হাবিব, চাচা মিয়া হোসেন, হাবিবের ছোট ভাই শফিক উদ্দিন ও নিজাম উদ্দিন মিলে বাড়ির পাশে একটি পতিত জায়গায় ঘটনার দিন রাতে লোকমানকে মদের সাথে ২ পাতা ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে বেশি করে খাওয়ানো হয় এবং তারা নিজেরা কম খায়। তাকে বাড়ির দক্ষিণ পাশে একটি সবজি ক্ষেতে নিয়ে হাবিব লাঠি দিয়ে প্রথমে লোকমানের মাথায় আঘাত করে অন্যরা দা, চাপাতি ও ছুরি দিয়ে কুপিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে বাড়িতে চলে যায়। সোমবার গ্রেপ্তারকৃতদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Similar Posts

error: Content is protected !!