রাজশাহীতে নানি-নাতির প্রেমের করুণ পরিণতি

সংবাদদাতা ।।

অসম প্রেম সম্পর্কে সবারই কিছুটা ধারণা আছে। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই এসব অসম প্রেমের পরিণতি ভালো হয় না বললেই চলে। এমনটাই ঘটেছে রাজশাহীতে নানি ও নাতির অসম প্রেমের সম্পর্কে।

নাতি খাদেমূল ইসলাম খোকন (১৭) ও চাচাতো নানি টিনা মনির (২৩) মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে পরিবারের সকলের অজান্তেই। টানা তিন বছর চলে তাদের এ সম্পর্ক। তাদের এ সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে নানি টিনা মনিকে বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। গত তিনদিন আগে টিনা মনি আবারো স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসে।

শনিবার সকালে নাতি খোকন আর নানি টিনা মনি দুজনেই গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। নানি-নাতির প্রেম সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার মতো ঘটনায় রূপ নেবে তা ভেবে হতবাক গ্রামবাসী ও তাদের স্বজনরা। রহস্যজনক ও চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ভোরে দুর্গাপুর উপজেলার আমগ্রাম এলাকায়।

উপজেলার আমগ্রাম এলাকার আব্দুল মজিদ ওরফে চেরুর ছেলে খাদেমূল ইসলাম খোকন এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। বাড়ির পাশেই চাচাতো নানা আবু সাইদের স্ত্রী টিনা মনির সঙ্গে প্রেম সম্পর্ক গড়ে উঠে।

nani_nati

টানা তিন বছর চলে তাদের প্রেমের সম্পর্ক। এরই মধ্যে টিনা মনি এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়। গত এক মাস আগে তাদের এ সম্পর্কের কথা জানা জানি হলে টিনাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় স্বামী আবু সাইদ। গত তিন আগে আবারো স্বামীর বাড়ি ফিরে আসে টিনা মনি। শুক্রবার রাত ৮টার পর থেকে খোকন ও টিনা নিখোঁজ হয়। উভয়ের পরিবারের লোকজন সারারাত তাদের খুঁজে না পেয়ে দিশাহীন হয়ে পড়ে।

শনিবার ভোর ৬টার দিকে তাদের দুজনকে আবু সাইদের বাড়ির পাশেই একটি আমগাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় গ্রামের লোকজন। এরপর তাদের পরিবারের লোকজনকে জানানোর পর পুলিশকে খবর দেয়া হয়। খোকনের বাবা আব্দুল মজিদ ওরফে চেরু অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। খোকনকে মারার জন্য এক সপ্তাহ আগে পরিকল্পনা করা হয়। ওই পরিকল্পনার কারণেই টিনাকে আবার গ্রামে ফিরিয়ে আনা হয়। এর আগে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে খোকনকে মারতে না পেরে আমাকেও হত্যার চেষ্টা চালায় তারা।

অপরদিকে, টিনা মনির পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও এ ব্যাপারে তারা কথা বলতে রাজি হননি।

দুর্গাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সালাম জানান, প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাটি আত্মহত্যা মনে হচ্ছে। তবে তাদের দুজনের পিঠেই ছোট ছোট দাগ পাওয়া গেছে। এমনকি তাদের দুজনকে টিনার ওড়না দিয়ে বাঁধা ছিল। লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রামেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। রিপোর্ট আসলেই জানা যাবে পরিকল্পিত হত্যা নাকি আত্মহত্যা। এ ঘটনায় সকালে দুর্গাপুর থানার ওসি পরিমল কুমার চক্রবর্তী সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে থানায় ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান এসআই আব্দুস সালাম।

Similar Posts

error: Content is protected !!