আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
কী পেলে সবচেয়ে ভাল থাকে শিশুরা? এ নিয়ে আলোচনা হয়েই থাকে। নানা সমস্যার কথা তোলা হয়। কিন্তু সমাধান মেলে কি?
সমাধান দিল সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা।
বিশ্বের কোন দেশে সবচেয়ে ভাল আছে শিশুরা, সম্প্রতি তা জানতে ৪১টি দেশে সমীক্ষা চালিয়েছিল ইউনিসেফ। সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, যে কোনও দেশের তুলনায় বেশি ভাল রয়েছে নেদারল্যান্ডসের শিশুরা। মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য, শিক্ষার সুযোগ, সামাজিক নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলির ওপর ভিত্তি করে চালানো হয়েছে এই সমীক্ষা। সে দেশের শিশুরা কী পায়, যা অন্যরা পায় না? কোন দিকে বিশেষ নজর দিয়ে থাকেন সেখানকার অভিভাবকরা? সে প্রসঙ্গেই উঠে এল কয়েকটি বিষয়, যে দিকে নজর দিলে সন্তানকে ভাল রাখা সম্ভব। জেনে নিন কোন বিষয়গুলি সন্তানের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ—
১। মন দিয়ে শুনুন সন্তানের কথা। শিশুদের মনকে অবুঝ বলে অবহেলা করবেন না। আপাত সরল কথার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে একাধিক জটিল মানসিক স্তর। নিজের মতামত সরাসরি সন্তানের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার বদলে সহজ যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করুন। এতে বাড়বে মানসিক আদান-প্রদান। যে কোনও তথাকথিত জটিল বিষয়ে কথা বলতে অনেক সহজ হবে সন্তান।
২। কথোপকথন বা আলোচনাই অধিকাংশ সমস্যা সমাধানের চাবি। বাক স্বাধীনতার প্রাথমিক শিক্ষা সন্তানকে দিতে হবে আপনাকেই। খেয়াল রাখুন কৈশোরে পদার্পণ করার সময়ে যৌনতা, লিঙ্গ পরিচয়, বন্ধুত্বের মতো বিষয়গুলি নিয়ে যেন আপনার সঙ্গে কথা বলতে সঙ্কোচ বোধ না করে সন্তান।
৩। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, পরিবারকে সময় দেওয়া কার্যত ডাচদের সামাজিক রীতি। একসঙ্গে নৈশভোজ বা খেলাধুলা করার মতো প্রাত্যহিক অভ্যাস সন্তানরা শিখে যায় খুব অল্প বয়সেই। মাথায় রাখা দরকার, বাবা-মায়ের থেকে শুরুতেই যেন লিঙ্গ সাম্যের শিক্ষা পায় সন্তান। সন্তানদের বড় করতে অভিভাবকদের ভূমিকা যেন হয় সমান সমান।
৪। সন্তানের বেড়ে ওঠায় প্রথাগত শিক্ষার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই। কিন্তু প্রথাগত শিক্ষা যেন ইঁদুর দৌঁড়ে পরিণত না হয়, তা নিয়েও সদাসতর্ক থাকতে হবে অভিভাবকদের। অস্বাস্থ্যকর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মনে জন্ম নেয় দ্বেষ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একশো বছর আগে বলে গেলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ভাবে সন্তানদের বেড়ে ওঠা এখনও কার্যত অকল্পনীয়।
৫। মনে রাখুন, সন্তান আপনার অপূর্ণ স্বপ্ন সম্পাদনের মাধ্যম নয়। সন্তানকে নিজের মতো স্বপ্ন দেখতে শেখান। স্বাধীনতায় পাশে থাকুন সহযাত্রী হয়ে। সীমাবদ্ধতায় রক্ষা করুন হীনমন্যতা থেকে, পারদর্শীতায় অল্প করে চাপড়ে দিন পিঠ। ভুল ধরা নয়, শাসন হোক ভুল শুধরে দেওয়ার পথ।