আবদুল্লাহ আল মহসিন ।।
নিসকিনা ভিটা কবরস্থান। এখানে নিকলী উপজেলা সদরের নগর, নাগারছিহাটি, চন্তিহাটি, মীরহাটি, বড়পুকুর পাড়, গোয়ালহাটি, দোয়ারহাটি এলাকাবাসীকে মৃত্যুর পর দাফন করা হয়। সদর ইউনিয়নের এই কবরস্থানটি অযত্ন আর অবহেলায় দিন দিন ছোট হয়ে আসছে।

উত্তর পাশে সোয়াইজনি নদী। পশ্চিম পাশে সোয়াইজনি নদী থেকে নিকলী সদর হাসপাতাল পর্যন্ত বয়ে গেছে খাল। দক্ষিণ পাশে চন্তিহাটি ও পূর্বপাশে নগর গ্রাম অবস্থিত। বর্ষায় পুরো এলাকা যখন পানিতে থই থই, ঢেউয়ে কবরস্থানটির উত্তর ও পশ্চিম পাশ তখন ক্রমশ ভেঙে যেতে থাকে। ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রতিরক্ষা দেয়াল তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে। সে সময় বড় আকারের বন্যায় প্রায় ডুবো ডুবো হয়ে যাওয়ায় তাৎক্ষণিক ২০ ফুট পরিমাণ জায়গা জুড়ে প্রতিরক্ষা দেয়াল করা হয়েছিল। এর পর থেকে আজ অবধি কোনো ধরনের উন্নয়ন বা সংস্কার কাজ করা হয়নি। এটি নিকলী উপজেলার প্রাচীন কবরস্থানগুলোর মধ্যে একটি।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কবরস্থানের উত্তর-পশ্চিম পাশের মাটি ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছে। এভাবে বছরের পর বছর ভাঙনের ফলে আকারে কিছুটা ছোট হয়ে এসেছে। দক্ষিণ পাশ ঘেঁষে চন্তিহাটি গ্রামের একটি পয়ঃনিষ্কাশন ও বর্জ্য ফেলার খোলা ড্রেন তেরি করা হয়েছে; সব সময় নোংরা আবর্জনায় ভরে থাকে। এতে কবরস্থানের অবমাননা ও পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে।

বর্ষাকালে কবরস্থানের মাঝখানের কিছু অংশ ছাড়া বাকিটা প্রায় ডুবো ডুবো হয়ে যায়। বর্ষার সময় মাটি খুঁড়লে অনেক সময় পানি উঠতে থাকে। দাফনের জন্য তখন অপেক্ষাকৃত শুকনো জায়গা খুঁজে পেতে কষ্টকর হয়ে যায়। একটি টিউবওয়েল আছে, সেটাও দীর্ঘদিন যাবত বিকল। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য পুরো কবরস্থানে মাটি ভরাট ও উত্তর-পশ্চিম পাশে প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ খুবই জরুরি।
সার্বিক বিষয়ে কথা হয় কবরস্থানের সভাপতি জসিম উদ্দিন মেম্বারের সাথে। তিনি জানান, সরকারি পর্যায় থেকে বাজেট সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না। সব মহলে তদবির অব্যাহত আছে। বরাদ্দ পেলে মাটি ভরাট ও প্রতিরক্ষা দেয়ালের কাজ শুরু করবো।

মাটি ভরাট, প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণসহ কবরস্থানের সাথে নামাজের জায়গা অথবা মসজিদ নির্মাণ করারও দাবি জানান এলাকাবাসী। বড়পুকুর পাড়ের এনামুল হক রুবেল বলেন, কবরস্থানের আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার।
ছবি তুলেছেন : শওকত ভূইয়া