বিশেষ প্রতিনিধি ।।
ইজারাদারের দায়ের করা মামলায় আটক জেলেকে ছাড়িয়ে নিতে এবং জুলুমবাজ ইজারাদারের শাস্তির দাবিতে শনিবার ১৫ অক্টোবর রাত ৮টায় কিশোরগঞ্জের নিকলীতে মিছিল করেছে অর্ধ সহস্রাধিক বিক্ষুব্ধ জেলে, কৃষক। এ সময় নিকলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে মিছিল থামিয়ে জুলুমবাজ ইজারাদারের শাস্তি ও থানায় আটক জেলেকে ছাড়িয়ে নেয়ার দাবি জানান মিছিলকারী জনতা। তাদের দাবির মুখে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কারার সাইফুল ইসলাম থানায় আটক হওয়া ঋতুভিত্তিক জেলে ইসলাম উদ্দিনকে (৪০) থানা হাজত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা শান্ত হয়ে বাড়ি ফেরে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিকলী উপজেলার দামপাড়া মৌজার অন্তর্গত চাকিডোয়ার বিলটি ইজারা নেয় নোয়াপাড়া গ্রামের সোনাফর মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান। ইজারালব্ধ বিলের প্রায় ৪৮ একর জমি হলেও মতিউর রহমান গং হাওরের হাজার হাজার একরের ভাসমান পানিতে জেলেদের মাছ ধরতে বাধা দেন। তাদের নিষেধ অমান্য করে হাওরের ব্যক্তি মালিকানা জমির ওপরের ভাসমান পানিতেও মাছ ধরতে গেলে জেলেদের জাল, নৌকা নিয়ে যায়। প্রতিবাদ করলে মারধোরও করা হয়।
এই গংয়ের হাতে ২০১৪ সালে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে ছাদির মিয়া নামে এক জেলেও খুন হন। এলাকার জেলেরা একজোট হলে ইজারাদার মতিউর রহমান বাদী হয়ে সপ্তাহখানেক আগে নিকলী থানায় একটি লুটতরাজের মামলা করে। আসামি করা হয় নোয়াপাড়া গ্রামের মীর হোসেনের ছেলে ইসলাম উদ্দিনসহ ১০ জনকে। শনিবার বিকালে নিকলী থানা পুলিশের হাতে ইসলাম উদ্দিন গ্রেফতার হন।
নোয়াপাড়া গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন ও মো. হান্নান জানান, ইজারাদার মতিউর রহমানের সাথে এলাকার ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতাকর্মী জড়িত হয়ে জেলেদের ওপর জুলুম করে। তারা ইজারা নেয়া ভূমির হাজারগুন জমির ভাসমান পানিও ইজারার অংশ বলে দাবী করে। মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে।
এলাকাবাসীর বক্তব্য পাওয়া গেলেও ইজারাদার মতিউর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার মতামত নেয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি।
নিকলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিয়াউল হক এই প্রতিনিধিকে জানান, এ বিষয়ক কোনো অভিযোগ তিনি জানেন না। তবে নির্ধারিত ইজারা ভূমির বাইরে কেউ জবরদখল করছে এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিকলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কারার সাইফুল ইসলাম বলেন, সোমবার দিন বসে বিষয়টির সুরাহার চেষ্টা করা হবে।
নিকলী থানার ওসি মো. মুঈদ চৌধুরী ইসলাম উদ্দিনকে আটক এবং ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব বিষয়টি আপোষ-মীমাংসার দায়িত্ব নিয়েছেন।