বাদির আপত্তি সত্ত্বেও চার্জশীটে আসামিভুক্তি : এসআই’র শাস্তি দাবি

বিশেষ প্রতিনিধি ।।

বাদীর দায়ের করা এজাহারে নাম নেই। এফআইআর কপিতেও নাম নেই। বরঞ্চ সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় বাদীকে তথ্য প্রদানে সহযোগিতার ভূয়সী প্রমাণ রয়েছে তার নামে। বাদীর আপত্তি সত্ত্বেও আসামির তালিকায় সেই ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্তি করে চার্জশীট প্রদান করেছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নিকলী থানার এসআই সমরেন্দ্র চন্দ্র দত্ত।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান এবং বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার, ঢাকার গোপনীয় শাখার এআইজিপি বরাবরে দুটি আবেদন করেছেন মামলাটির চার্জশীটভুক্ত আসামি মো. আতিকুল হক (৫০) নামের এক ব্যক্তি। আবেদন দু’টিতেই কুচক্রী মহল কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে নিরপরাধ ব্যক্তির নাম চার্জশীটে অন্তর্ভুক্তি করায় এসআই সমরেন্দ্র চন্দ্র দত্তের বিভাগীয় শাস্তি ও ঘটনার পুনঃতদন্তের দাবি জানানো হয়।

জানা যায়, নিকলী উপজেলা সদরের একটি চক্র ২০১৬ সালের অক্টোবরের ৭ তারিখ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত নিকলী মৌজার (সিএস-১, আরএস-১ এর দাগ নং-সিএস১৩৬৯, আরএস ১৪৪৮, আরএস ৫৬৯১ দাগের ৬৫ শতাংশ) একটি সরকারি পুকুর দখলে নিতে বালু ফেলে। সরকারি সম্পত্তি রক্ষা ও পুকুরটির দুই পাড়ের বাসিন্দা প্রায় অর্ধ সহস্রাধিক পরিবারের পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যা সৃষ্টির সম্ভাবনায় নাগারছিহাটি গ্রামের মৃত কুদ্রত আলীর ছেলে (একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক) মো. আতিকুল হক তার মোবাইল ফোন দিয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ভূমি কমিশনার এজেডএম সারজিল হাসানসহ নিকলী সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আ. গফুরকে অবহিত করেন। একই দিন বিকাল ৩টায় ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আঃ গফুর তার সহকর্মীদের নিয়ে উপস্থিত হয়ে পুকুরটি ভরাটে বাধা প্রদান করেন।

এ সময় বাধা উপেক্ষা করে বালু ভরাট কার্যক্রম অব্যাহত এবং আ. গফুরসহ তার সহকর্মীদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। দুষ্কৃতিকারী চক্রটির সদস্যদের নাম সংগ্রহ করে আ. গফুর অফিসে ফিরে আসেন এবং নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেন। বিকাল ৫টায় নির্বাহী কর্মকর্তা এজেডএম শারজিল হাসান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কারার সাইফুল ইসলাম, সদর ইউপি চেয়ারম্যান কারার বুরহান উদ্দিন, ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য রুমা আক্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আ. গফুর বাদী হয়ে ১০ অক্টোবর ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে নিকলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং-১০(১০)১৬। মামলা ও এফআইআর এ ৬ নং আসামি হিসাবে মো. আতিকুল্লাহ (৫০), পিতা-ছৈরত আলী, সাং-কৈবতহাটি নাম উল্লেখ করা হয়। যে নাম ঠিকানায় একজন দুষ্কৃতিকারী বাস্তবিক অর্থেই রয়েছে এবং মামলার বাদির এ বিষয়ক স্বীকারোক্তির মোবাইল রেকর্ডও রয়েছে। বাদী আ. গফুরের আপত্তি সত্ত্বেও মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা নিকলী থানার এসআই সমরেন্দ্র চন্দ্র দত্ত কুচক্রী মহলটির প্ররোচণায় নাম ঠিকানা পরিবর্তন করে প্রকৃত আসামির স্থলে প্রথম তথ্য প্রদানকারী মো. আতিকুল হকের নাম লিখে চার্জশীট তৈরি করে আদালতে পাঠান।

এ ঘটনায় মো. আতিকুল হক ১১ জানুয়ারি সশরীরে উপস্থিত হয়ে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার ও ১৯ জানুয়ারি নিবন্ধিত ডাকযোগে বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার, ঢাকার গোপনীয় শাখার এআইজিপি বরাবরে আবেদন করেন। জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান পুনঃতদন্তভার এডিশনাল পুলিশ সুপার (বাজিতপুর সার্কেল)কে প্রদান করেছেন বলে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়।

এডিশনাল পুলিশ সুপার (বাজিতপুর সার্কেল) উবাইদুল ইসলাম জানান, এ সংক্রান্ত কোন দায়িত্ব বা নির্দেশনা এখন পর্যন্ত পাইনি। এ প্রতিনিধির কাছে তিনি আবেদনটির বিষয়বস্তু জেনে নিয়ে নির্দেশনা পাওয়ার পর দেখবেন বলে জানান।

Similar Posts

error: Content is protected !!