বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক পাচ্ছেন কৃষিগানের জাদুকর তারা মিঞা

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

তৃতীয়বারের মতো ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক’ পাচ্ছেন কৃষি গানের জাদুকর সৈয়দ নূরুল আউয়াল তারা মিঞা। কৃষি উন্নয়নে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, উদ্বুদ্ধকরণ প্রকাশনা ও প্রচারণায় অবদানের জন্য তিনি ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার-১৪২২’ লাভ করেছেন। আগামীকাল ১৬ জুলাই রোববার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পদক তুলে দেবেন। কিশোরগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক পত্রে পদকপ্রাপ্তির বিষয়টি জানানো হয়েছে।

সৈয়দ নূরুল আউয়াল তারা মিঞা এর আগে ১৪০৬ বঙ্গাব্দ এবং ১৪১৮ বঙ্গাব্দে দুই বার ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’-এ ভূষিত হন।

সৈয়দ নূরুল আউয়াল তারা মিঞা বাংলাদেশে ‘কৃষি গানের জাদুকর’ হিসেবে পরিচিত। তার গানে ফসল হয় সুরক্ষিত; বৃক্ষরা হয় ফলবতী। তিনি যখন দরাজ কণ্ঠে সুর ছাড়েন ‘দেশের বাতাস উল্টে গেলরে আষাঢ় মাসে খরা ভাই-সেচের চিন্তা কর আগে আয় আয়রে চাষি ভাই…’। তখন সচেতন হন কৃষক। মাঠে নামেন নতুন উদ্যমে। ফসলের গানের এই শিল্পী সৈয়দ নূরুল আউয়াল তারা মিঞা। গানে গানে কৃষি উন্নয়নে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্বুদ্ধকরণে তিনি ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’ ছাড়াও ১৩৯৮ বঙ্গাব্দে পেয়েছেন ‘রাষ্ট্রপতি পদক’।

‘রাষ্ট্রপতি পদক’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’ ছাড়াও সৈয়দ নূরুল আউয়াল তারা মিঞা ‘শুরূক সাহিত্য পদক/৯৯’, ‘সিরাতুন্নবী (সাঃ) পদক/১৪১৬হিঃ’, ‘বাসপ সম্মাননা পদক/২০০৭’, ‘রাজ্জাক সখিনা কল্যাণ ট্রাস্ট পুরস্কার/২০০৭’, ‘মৃত্তিকা পদক/২০০৭’, ‘শের-ই বাংলা এ, কে, এম ফজলুল হক সম্মাননা পুরস্কার/২০০৯’, ‘ড. মোঃ শহীদুল্লাহ সম্মাননা স্মারক/২০০৯’, ‘কৃষি বিপ্লব সম্মাননা পদক/২০০৯’, ‘বিজয় দিবস সম্মাননা পুরস্কার/২০০৯’, ‘বাউল সম্রাট শাহ আঃ করিম সম্মাননা পদক/২০১০’, ‘গুণীজন সম্মাননা পুরস্কার/২০১০’, ‘শিল্পপ্রাণ সম্মননা পুরস্কার/২০১১ইং, ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ পুরস্কার/২০১২’ সহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন।

বিচিত্র ও বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী তারা মিঞার বর্ণিল অসংখ্য কর্মকাণ্ড যে কোন মানুষকে অভিভূত করার মতো। সৈয়দ নূরুল আউয়াল তারা মিঞার পিতা মরহুম সৈয়দ আকবর আলী এবং মাতা সৈয়দা মালেকা খাতুন। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই তেরহাসিয়ার পীর সাহেব বাড়ি পৈত্রিক নিবাস হলেও বর্তমানে শহরের গাইটাল জনতা স্কুল সংলগ্ন বাড়িতে সপরিবারে বসবাস করছেন।

নিভৃত সাধক, গণজাগরণের কবি এবং বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের নিয়মিত শিল্পী সৈয়দ নূরুল আউয়াল তারা মিঞার পরিচিতি আজ সারা দেশে। কৃষি, পরিবেশ, মৎস্য, পশু পালন, জনস্বাস্থ্য, বার্ড ফ্লু, এইডস, আর্সেনিক, স্যানিটেশন, মাদক, গণশিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ভিত্তিক গানের শিল্পী হিসেবে তৃণমূলের মানুষের কাছে তার জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। স্বভাবকবি তারা মিঞার তাৎক্ষণিক গান রচনা ও সুরারোপ করার অসাধারণ ক্ষমতায় বিমোহিত হন দর্শক-শ্রোতা।

নম্র, ভদ্র আর বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী তারা মিঞার লেখা গানের সংখ্যা অসংখ্য। ৫টি গানের, ৪টি কবিতার এবং একটি হামদ ও নাতের বই এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া আরো ১৮টি বই প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। সুফিবাদে বিশ্বাসী শক্তিশালী লেখক তারা মিঞার বহু গান দেশের বিভিন্ন বেতার কেন্দ্রে শিল্পীদের কণ্ঠে গীত হয়ে আসছে। বেতার ও টেলিভিশনের নিয়মিত শিল্পী ও গীতিকার তিনি। সুফিবাদে বিশ্বাসী তারা মিঞা গানের পাশাপাশি কবিতা ছড়া ও অন্যান্য সাহিত্যও লিখে চলেছেন সমানতালে।

সূত্র : তৃতীয় বারের মতো ‘বঙ্গবন্ধু পদক’ পাচ্ছেন কৃষি গানের জাদুকর তারা মিঞা  [কিশোরগঞ্জ নিউজ, ১৩ জুলাই ২০১৭]

Similar Posts

error: Content is protected !!