আজিজুল হক বিপুল, মহাস্থান (বগুড়া) প্রতিনিধি ।।
একটু সুখের আশায় পরিবার পরিজন ছেড়ে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল খালেক মণ্ডলের ছোট ছেলে রাজু মণ্ডল (৩২)।
গত ২১ মার্চ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি। এরপর থেকে সৈয়দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়া সহ আশপাশে বেশ কয়েকটি গ্রামে নেমে আশে শোকের ছায়া।
স্ত্রী মিষ্টি আক্তার ও শিশু কন্যা রিতুর চোখের পানি কিছুতেই যেন শুকাবার নয়। বৃদ্ধ বাবা ভাই-বোন তাদেরকে সান্ত্বনা দেয়ার মতো কিছুই নেই। স্থানীয় একটি আর্থিক সংস্থা থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ করে এবং জমি বিক্রি করে পাঁচ মাস আগে বৃদ্ধ বাবা ও পরিবারকে একটু সচ্ছলতার আলো দেখাতে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন বগুড়ার ছেলে রাজু মণ্ডল।
সৌদি আরব থেকে একাধিক সূত্রে জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনার পর রাজু ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন। তার লাশ সৌদি আরবে একটি হাসপাতালের মর্গে সংরক্ষণ করা হয়েছে। রাজুর লাশ বাংলাদেশে প্রেরণ করার জন্য কাগজপত্র সংক্রান্ত জটিলতার সৃষ্টি হলেও বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা করা হয়নি।
রাজুর পিতা আব্দুল খালেক মণ্ডল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বাবা আমার তো সব শেষ হয়ে গেলো। আমার যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়েছে। আমি এখন আর কিছু চাই না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার আকুল আবেদন আমার ছেলের লাশ যেন আমার পরিবারের কাছে পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা করেন এবং আমার এতগুলো ঋণ মওকুফ করার সুযোগ দেয়া হয়।
এছাড়াও শিশুকন্যা রিতু বলে, আমার বাবাকে আমি ফেরত চাই, আমি আমার বাবাকে দেখতে চাই। স্ত্রী মিষ্টি আক্তার ও শোকার্ত পরিবারের ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজন সকলেই রাজুর লাশ যাতে তাড়াতাড়ি বাংলাদেশে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয় সেই দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন তৌফিক বলেন, রাজু মণ্ডল আমার এলাকার বাসিন্দা, সে খুব ভালো মানুষ ছিল। আমি তাকে বাহিরে যেতে সকল প্রকার সহযোগিতা করেছি এবং এলাকার লোকজনও তাদেরকে সহযোগিতা করেছে। আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসাবে সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি কোনো জটিলতা ছাড়াই অসহায় ও দরিদ্র আব্দুল খালেক মণ্ডলের পরিবারের কাছে রাজুর লাশ পৌছানোর ব্যবস্থা করা হোক।