মাহমুদ আল আজাদ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি ।।
কওমী সনদের স্বীকৃতি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক এবং সম্মানের বিষয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এটি আমাকে দিয়ে সম্মান দেখিয়েছেন। আমরা তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তোমরা (ছাত্ররা) ও এটার মূল্যায়ন করো। তোমরা অনেক বড় ডিগ্রি পেয়ে গেছ। একসময় তোমরা সরকারি মাদরাসায় চুপে চুপে পরীক্ষা দিতে। এখন সরকারি মাদরাসার ছাত্ররা এখানে এসে পরীক্ষা দিবে। সরকারি সনদ দিয়ে কওমী উলামাদের সম্মানিত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, হে আল্লাহ! হাটহাজারীর সম্মান তুমি বাড়িয়ে দাও। এই হাটহাজারীতে যারা মাদক, ইয়াবা, মদ, জুয়া ইত্যাদির মাধ্যমে বদনাম ছড়াচ্ছে আপনি তাদের হেদায়াত দিন। যারা এর থেকে বিরত থাকবে না তাদের ধ্বংস করে দিন।
আজ ১ অক্টোবর (সোমবার) দারুল উলূম হাটহাজারীর ছাত্র মিলনায়তনে বেফাকুল মাদারিসিল আরবিয়া বাংলাদেশ ও আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের ২০১৮ সালের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় মুমতাজ (জিপিএ ৫) প্রাপ্ত চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ এবং কওমী মাদরাসার ঐতিহ্য ও অবদান শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা শাহ আহমদ শফী এসব কথা বলেন।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কওমী মাদরাসার স্বীকৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেই সম্মানীত হয়েছেন। তিনি উলামা সমাজকে যথেষ্ট মূল্যায়ন করেছেন। আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেব যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই প্রধানমন্ত্রী সনদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। তিনি আমাদের সবার মুরব্বী। আল্লাহ তা’আলা তাকে দীর্ঘায়ু করুন।
হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, কওমী সনদের স্বীকৃতি দিয়ে দেশ ও জনগণের সেবা করতে হতে। বাতিলের দাঁতভাঙ্গা নয় মাড়িভাঙ্গা জবাব দিতে হবে।
চট্টগ্রাম সাতকানিয়া আসনের এমপি ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বলেন, কওমী সনদের এমন স্বীকৃতি বিশ্বে বেনজীর। বিশ্বের কোথাও সরকারিভাবে স্বতন্ত্র স্বীকৃতির নজির নেই। অন্যান্য দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সনদ দেয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে সরকারিভাবে স্বতন্ত্র স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। বিশ্বে যত মাদরাসা আছে সবগুলোর মূল হলো কওমী মাদরাসা।
তিনি আরো বলেন, এই কওমী সনদের স্বীকৃতির জন্যে যারা কষ্ট করেছেন, বিশেষ করে আমাদের সবার উস্তাদ আল্লামা আহমদ শফী, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল ইয়ার মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন এবং আমরা যারা আইন পাস করেছি তাদের সবার জন্যে দু’আ করতে হবে।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বেফাক মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, বেফাক মহাপরিচালক মাওলানা জুবায়ের আহমদ চৌধুরী, বেফাক সহকারী মহাসচিব মুফতি নুরুল আমিন, হাটহাজারী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মীর কফিল উদ্দিন, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন, ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির প্রমুখ উলামায়ে কেরাম।
প্রসঙ্গত আজ বেফাক কর্তৃক চট্টগ্রাম বিভাগের জিপিএ-৫ পাওয়া ১৫০ জন ছাত্রকে পুরস্কার ও নগদ টাকা প্রদান করা হয়।