বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

অনুচ্ছেদ ৭ বিলুপ্ত করে আনা বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মাদ আলী সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ বুধবার (৩১ অক্টোবর ২০১৮) এ আদেশ দেয়।

‘কমিটির সদস্যপদের অযোগ্যতা’ শীর্ষক বিএনপির গঠনতন্ত্রে ৭ নম্বর ধারা বাদ দিয়ে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া সংশোধিত গঠনতন্ত্রে আপত্তি জানিয়ে জনৈক মোজাম্মেল হোসেনের করা আবেদন ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেছে আদালত। এ আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ইসিতে জমা দেয়া বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার।

চলতি বছরের শুরুতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার (সিইসি) কাছে সংশোধিত গঠনতন্ত্র জমা দেয়।

বিএনপির গঠনতন্ত্রে ৭ নম্বর ধারায় ‘কমিটির সদস্যপদের অযোগ্যতা’ শিরোনামে বলা আছে, ‘নিম্নোক্ত ব্যক্তিগণ জাতীয় কাউন্সিল, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, জাতীয় স্থায়ী কমিটি বা যেকোনো পর্যায়ের যেকোনো নির্বাহী কমিটির সদস্যপদের কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থীপদের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।’ তাঁরা হলেন : (ক) ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির আদেশ নম্বর ৮-এর বলে দণ্ডিত ব্যক্তি। (খ) দেউলিয়া, (গ) উন্মাদ বলে প্রমাণিত ব্যক্তি, (ঘ) সমাজে দুর্নীতিপরায়ণ বা কুখ্যাত বলে পরিচিত ব্যক্তি।

এ প্রস্তাব জমা দেয়ার পর মোজাম্মেল হোসেন ওই সংশোধনী না আনার জন্য ইসিতে একটি আবেদন করেন। এরপর তিনি হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন। এছাড়া আদালত আজ রুলও জারি করেছে। দণ্ডিতরা পদে থাকা সংক্রান্ত সংশোধনী কেন বেআইনি হবে না এবং সংবিধান এর ৬৬ (২) ঘ এর পরিপন্থি হবে না-রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় সরকার সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন মেহেদী সাংবাদিকদের বলেন, মোজাম্মেল হোসেনের দায়ের করা রিটে বলা হয়েছে, বিএনপির আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে তিনি (রিটকারী) বিএনপিতে যোগ দেন। কিন্তু বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্রের ৭ অনুচ্ছেদ বাতিল করায় তিনি সংক্ষুব্ধ হন। ওই অনুচ্ছেদে বলা ছিল, দুর্নীতিপরায়ণ কোনো ব্যক্তি বা দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত কোনো ব্যক্তি বিএনপির কোনো পর্যায়ের নেতৃত্বে আসতে পারবে না। কিন্তু বিএনপি নেতাদের আশঙ্কা, বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন দুর্নীতর দায়ে দণ্ডিত হতে পারেন। এ আশঙ্কায় তারা গঠনতন্ত্রের ৭ অনুচ্ছেদ বাতিল করে সংশোধনী আনে এবং সংশোধিত গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়। এ বছরের জানুয়ারিতে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ দলীয় কাউন্সিলে গঠনতন্ত্রে কিছু সংশোধনীর প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। সেই সংশোধনীসহ বিএনপির নতুন গঠনতন্ত্র চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি জমা দেয়া হয় নির্বাচন কমিশনে। তাতে দেখা যায়, বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্রের ৭ ধারাটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে। বাসস

Similar Posts

error: Content is protected !!