লাখাইয়ে হাট-বাজারে কমছে না জনসমাগম, মানছে না সামাজিক দূরত্ব

মহসিন সাদেক, লাখাই (হবিগঞ্জ) ।।

সম্প্রতি সময়ের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ও মারাত্মক সংক্রমণ ব্যাধি করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলছে লাখাইয়ে। মফস্বলের জনপদ লাখাইর বেশিরভাগ মানুষ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার কর্মজীবি হওয়ায় এলাকায় ঝুঁকিও বেশি। ইতিমধ্যে রাজধানী ঢাকা ও নারায়ানগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগতদের সংখ্যা উপজেলা জুড়ে কম নয়।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘরমুখী মানুষসহ উপজেলার হাটবাজারে জনসমাগম কমাতে বাজার স্থানান্তরসহ নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। এছাড়াও সেনাবাহিনীর সচেতনতামূলক প্রচারসহ টহল, পুলিশের নিয়মিত টহল ও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হচ্ছে নিয়মিত।

এত কিছুর পরও কোনভাবেই ঘরে থাকছে না মানুষ। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয় উপেক্ষা করে মানুষ বিভিন্ন অজুহাতে বেরিয়ে আসছে। বিশেষ করে বাজার-হাটগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে এলাকায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন সকাল থেকে বাজারগুলোতে বাড়তে থাকে মানুষের উপস্থিতি। সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বাজারগুলোতে ক্রেতাদের থাকে উপচে পড়া ভিড়। যেখানে সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা একজন আরেকজনের ঘা না ঘেঁষে চলাই দায় হয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রবীণ ব্যক্তির সাথে আলাপকালে তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, যেখানে মানুষের জীবন নিয়ে টানটানি সেখানে বাজারগুলোতে মানুষের এত উপস্থিতি ঈদের সময়ও দেখিনি। বাজারগুলোতে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো।

এদিকে লাখাইয়ে বেড়েই চলেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রথমবারের মতো লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, একজন নার্স ও নারায়াণগঞ্জ ফেরত এক ব্যক্তিসহ মোট তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের পর আবার একই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন নার্সের শরীরের কেভিড-১৯ পজেটিভ পাওয়া যায়। এই অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও গত ২৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার উপজেলার মনতৈল গ্রামে ইছাক মিয়ার পুত্র ঢাকা ফেরত শামীম মিয়া ও ২৪ এপ্রিল রাতে জানা যায় নতুন করে আক্রান্ত আরো একজনের খবর। নতুন আক্রান্ত নারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্যাম্পল কালেকশনকারী স্বাস্থ্য সহকারী রহুল আমীন ভুইয়ার স্ত্রী বলে জানা গেছে। এ নিয়ে উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬জন।

কোভিড-১৯ আক্রান্তের অপর ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সৈয়দ আদনান আরোফিন, একই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স নাজমিন নাহার বিউটি, নার্স বৃষ্টি রানী এবং লাখাই উপজেলার ১নং লাখাই ইউনিয়নের মহরমপুরের নারায়াণগঞ্জ ফেরত বাবুল মিয়া।

সূত্রে জানা যায়, একের পর এক হাসপাতলের সংশ্লিষ্টজন আক্রান্ত হওয়ায় সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সরকারের নির্দেশে বন্ধ রাখা হয়েছে লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। ফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বন্ধ ঘোষণায় দুর্ভোগে পড়েছে চিকিৎসা সেবা প্রার্থীরা। সেই সাথে চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থায় দেখা দিয়েছে বির্পযয়।

Similar Posts

error: Content is protected !!