সর্ববৃহৎ ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া

sholakia eidgah

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।
দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ। স্থানীয় প্রশাসন এই ঈদ জামাতকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

পৌর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে মাঠ পরিস্কার পরিচ্ছন্নসহ সার্বিক সংস্কার কাজ শেষ করেছে। কর্মীরা মেহরাবের চুনকাম, মাঠে দাগ কাটার কাজ ও ওজুখানা পরিস্কার করেছে।
sholakia eidgah
মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনের মাস্টার মো. জহির উদ্দিন জানান, ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতের মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ২টি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। ওইদিন ভৈরব থেকে সকাল ৬টায় ছেড়ে আসা ট্রেন কিশোরগঞ্জ এসে পৌঁছাবে সকাল ৮টায়। ওইদিনেই ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ স্টেশন থেকে দুপুর ১২টায় ছেড়ে ভৈরব পৌঁছাবে দুপুর ২টায়।

অন্য স্পেশাল ট্রেনটি ভোর পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে কিশোরগঞ্জ এসে পৌঁছাবে সকাল সাড়ে ৮টায়। আবার সোয়া ১২টায় কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে বিকেল ৩টায় ময়মনসিংহ পৌঁছাবে।
sholakia eidgah
এবারও বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল শোলাকিয়া মাঠ থেকে ঈদ জামাত সরাসরি সম্প্রচার করবে বলে জানা গেছে। এদিকে ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ইতোমধ্যে ঈদকে স্বাগত জানিয়ে বড় বড় তোরণ নির্মাণ ও সড়ক দ্বীপগুলো ব্যানার দিয়ে সাজানো হয়েছে।

শোলাকিয়ার ঐতিহ্য হিসেবে ঈদের নামাজ শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি ও ১ মিনিট আগে ১টি শর্টগানের গুলি ফুটিয়ে জামাত আরম্ভের ঘোষণা দেয়া হয়। এ বছর ঈদ বর্ষাকালে হওয়ায় ময়দানের আশপাশে কোথাও যেন পানি না জমে সে জন্য পানি নির্গমনের দিকটিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

সকাল ১০টায় শোলাকিয়ায় ১৮৯তম ঈদুল ফিতরের জামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা ফরীদউদ্দীন মাসউদ।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস জানান, দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ শোলাকিয়ায় দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করায় সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুসল্লিরা যাতে দুর্ভোগে না পড়েন সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হবে।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খান জানান, শোলাকিয়ায় সুষ্ঠুভাবে ঈদ জামাতের জন্য মাঠ ও এর আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রবেশ দ্বারে বসানো হয়েছে আর্চওয়ে। এছাড়া পুলিশের ক্যাম্প বসানোসহ সাদা পোশাকে গোয়েন্দা দল মোতায়েন থাকবে ঈদগাহ এলাকায়।

মাঠের সার্বিক নিরাপত্তায় পোশাকী সিকিউরিটির পাশাপাশি র‌্যাব ও ছদ্মবেশে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন মাঠ ও মাঠের বাইরে দায়িত্ব পালন করবেন।
sholakia eidgah
জানা যায়, ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে ১ম বড় জামাতে সোয়া লাখ লোক অংশ নিয়েছিলেন। যে কারণে এর নামকরণ করা হয় সোয়ালাকিয়া। ভিন্নমতে, মোঘল আমলে এখানকার পরগণার রাজস্বের পরিমাণ ছিল সোয়া লাখ টাকা। উচ্চারণগত কারণে এই ঈদগাহ মাঠ শোলাকিয়া নামে পরিচিতি লাভ করে।

শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটি সূত্র জানায়, মসনদ-ঈ-আলা ঈশা খাঁর ৬ষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খানের উত্তরসুরী দেওয়ান মান্নান দাদ খান ১৯৫০ সালে ৪.৩৫ একর জমি শোলাকিয়া ঈদগাহকে ওয়াকফ করে দেন। এ মাঠের বর্তমান জমির পরিমাণ হয়েছে ৬.৬১ একর। কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্বপ্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের অবস্থান। মাঠে প্রবেশের মূল সড়কে একটি তোরণ ও একটি দোতলা মিম্বর রয়েছে। প্রতি বছর ১লা শাওয়াল ও ১০ই জিলহজ্জ যথাক্রমে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

Similar Posts

error: Content is protected !!