মিঠামইনে ভয়াবহ সংঘর্ষ, নিহত ৫, আহত অর্ধশত

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

মিঠামইনে জলমহালে পাটিবাঁধ দেয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে তিন সহোদরসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া উভয়পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার চারিগ্রামে টাগুরিয়া গ্রামের মারুফ খানের পক্ষের সাথে খাসটিঙ্গা গ্রামের মাসুম মিয়া পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। নিহতরা হলেন, চারিগ্রামের খাসটিঙ্গা গ্রামের আবদুল আজিজের তিন ছেলে ফরদিস মিয়া (৫৫), মাখন মিয়া (৪২) ও মাসুম মিয়া (৩৫) এবং প্রতিপক্ষের চারিগ্রামের টাগুরিয়া গ্রামের সুজন মিয়ার ছেলে রাজীব মিয়া (৩২) ও ঢাকী পূর্বগ্রাম আইয়ুব রেজার ছেলে মকবুল মিয়া (৩২)। এছাড়া নিহত ফরদিস মিয়ার ছেলে রিফাকুল ইসলামকে (২৭) মুমূর্ষু অবস্থায় কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, চারিগ্রামের খাসটিঙ্গা ও টাগুরিয়া গ্রামের পাশে খাসটিঙ্গা খাল নিয়ে টাগুরিয়া গ্রামের সোলেমান ভূঁইয়া ও মারুফ খানের পক্ষের সাথে খাসটিঙ্গা গ্রামের পল্লব ও মাসুম পক্ষের লোকজনের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।

এ পরিস্থিতিতে খাসটিঙ্গা গ্রামের পল্লব ও মাসুম পক্ষের মাসুমের নেতৃত্বে লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বুধবার খালটিতে মাছ ধরার জন্য পাটিবাঁধ দিতে যায়। প্রতিপক্ষের মারুফ খাঁনের পক্ষ থেকে বিষয়টি মিঠামইন থানাকে জানানোর পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাসুম গ্রুপের দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে দু’পক্ষের মধ্যে বুধবার সন্ধ্যা থেকেই উত্তেজনা চলে আসছিল। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে দু’পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে মাসুম পক্ষের মাসুম ও মাসুমের ভাই মাখন এবং প্রতিপক্ষ মারুফ পক্ষের রাজীবের ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়। সংঘর্ষে আহত অন্যদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে নিহত মাসুমের আরেক ভাই ফরদিস এবং মারুফ পক্ষের মুকবুল মিয়ার মৃত্যু হয়। এছাড়া সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৪০জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১১ জনকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল, ৭ জনকে মিঠামইন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও অন্যদের হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ব্যাপারে মারুফ খান বলেন, দুপুর ১২টার দিকে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাদের পক্ষের রাজীবকে পথ আটকে মাসুমের পক্ষের লোকজন ঘটনাস্থলেই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করে। এ ঘটনার খবর পেয়ে তাদের পক্ষের লোকজন এগিয়ে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

মিঠামইন থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সূত্র : মিঠামইনে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৫ [মানবজমিন, ১০ নভেম্বর ২০১৭]

Similar Posts

error: Content is protected !!