ধাতবমুদ্রা এখন ব্যবসায়ীদের গলারকাঁটা

আবদুল্লাহ আল মহসিন ।।
ধাতব মুদ্রা এখন ব্যবসায়ীদের জন্য গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। এক টাকা, পাঁচ টাকার খুচরা ধাতব কয়েন মুদ্রা চালাতে না পেরে নিকলী উপজেলার বেকারি মালিকরা ও ক্ষুদ্র, মাঝারি মুদি দোকানী ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছে। অনেক ব্যবসায়ী কমমূল্যে কয়েন বিক্রি করে বাজার থেকে মাল কিনে নেয়ার কথা জানিয়েছেন। এ অবস্থায় কেউ পুঁজি হারানোর আশংকায় ভুগছেন। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের দোকানে গিয়ে দেখা যায় ধাতব কয়েন ব্যাংকে ও বাজারে চালাতে না পেরে বস্তা ও প্যাকেটবন্দী করে রেখেছে।
উপজেলার হাট-বাজারের দোকানগুলিতে লাখ লাখ কয়েনের স্তূপ অলসভাবে পড়ে আছে। এই কয়েন ব্যবসায়ীরা খুচরা কাস্টমার থেকে গ্রহণ করলেও মহাজনরা নিতে চায় না। স্তূপীকৃত কয়েন নিয়ে ব্যবসায় ক্ষতির শিকার নিকলী নতুনবাজার হাবিব বেকারির মালিক আমাদের নিকলীকে জানান, গত কয়েক মাসে আমার বেকারিতে এক লাখ টাকা মূল্যমানের ধাতব মুদ্রার কয়েন অলসভাবে পড়ে আছে। নিকলীর কোনো ব্যাংক দাতব কয়েন নিতে চায় না। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেও চালাতে না পেরে বেকারি ম্যানেজার নিপুস দাস তার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে প্রিমিয়ার ব্যাংকের একটি শাখাতে মাত্র ২০ হাজার টাকার কয়েন জমা দিতে পেরেছেন। আরো ৮০ হাজার টাকার কয়েন অলসভাবে পড়ে আছে। তিনি আরো জানান, আবারো নতুন করে ক্যাশে ১০ হাজার টাকা মূল্যমানের ধাতব কয়েন ইতিমধ্যে জমা হয়ে গেছে। বেকারির ম্যানেজার নিপূস দাস বলেন, বেকারি চালাতে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিভিন্নজনের কাছ থেকে ধার করে কোনো রকমে চলছি।
একই সমস্যায় রয়েছেন উপজেলার নিকলী নতুনবাজার, পুরান বাজার, দামপাড়া, মজলিশপুর বাজারের মুদি ব্যবসায়ীরা।
প্রসংগত উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন জায়গায় যখন কয়েন মুদ্রা নিয়ে ব্যবসায়ীরা সংবাদ মাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ও তাদের ভোগান্তির কথা প্রচার হয়, তখনই ১১ জানুয়ারি সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা ব্যবস্থাপনা বিভাগ একটি সার্কুলার জারি করেন। এতে বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক কারো কাছ থেকে ধাতব মুদ্রা জমা না নিলে সেই ব্যংককে জরিমানা করা হবে। এতে আশা করা যায় ব্যবসায়ীদের কয়েন বিড়ম্বনা কিছুটা হলেও লাঘব হবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!