মোঃ নজরুল ইসলাম, অষ্টগ্রাম প্রতিনিধি ।।
কিশোরঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামে বোরোধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী এবার অষ্টগ্রামে ২৩ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে বোরোধানের চাষ করা হয়েছে। এই একটি মাত্র ফসলের উপর নির্ভরশীল অষ্টগ্রামের কৃষকেরা। প্রতিবছরই এ বোরো মৌসুমে অষ্টগ্রামের হাওরে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বন্যা, খরা, শিলাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, পোকামাকড়ের আক্রমণসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিয়ে থাকে। তাছাড়া বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকসহ প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণের মূল্য বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ যেমন বেশি পড়ছে তেমনি উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষককে প্রতিবছরই কৃষিতে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এতে কৃষক আজ দিশেহারা। যার ফলে হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামের কৃষকেরা কৃষিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ফলশ্রুতিতে এবছর হাওরের প্রায় অর্ধেক জমি পতিত রয়েছে বলে জানা যায়।
ধান কাটার মৌসুম প্রায় সমাগত। এবছর এখনো তেমন কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলেও সম্ভাব্য করোনা পরিস্থিতিতে ধান কাটার মৌসুমে ব্যাপকভাবে শ্রমিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন কৃষকরা। এ সংকট দেখা দিলে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে হাওরের কৃষক ও দেশের কৃষি অর্থনীতি।
কাস্তুল গ্রামের কৃষক মোঃ হিরু মিয়া জানান, বিগত তিন বছর যাবৎ শিলাবৃষ্টি ও বন্যা আমার সকল ফসল কেড়ে নিয়েছে। এবার জমিতে ভালো ফলন হলেও ধান কাটার জন্য কোথাও শ্রমিকের সন্ধান পাচ্ছি না। কৃষক হারুন মিয়া জানান, জমিতে ফলন ভালো হলেও ইদানিং ধানের শীষ সাদা হয়ে মরে যাচ্ছে। তাছাড়া ধান কাটার শ্রমিক না পেয়ে খুব চিন্তায় আছি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শহিদুল ইসলাম এ প্রতিনিধিকে জানান, শ্রমিক সংকট যাতে না হয় এজন্য আমরা ৩৫টি স্পট নির্ধারণ করে শ্রমিকদের সাথে কথা বলেছি। যদি তারা প্রশাসন কর্তৃক বাধাগ্রস্ত না হয়, তবে যথাসময়ে চলে আসবে। অবশ্য এজন্যে প্রশাসনের সহযোগিতা দরকার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জের উপ-পরিচালক মোঃ সাইফুল আলম মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, অষ্টগ্রামসহ সকল হাওরে ধান কাটার জন্য যাতে যথাসময়ে শ্রমিক আসতে পারে এজন্যে তাদের তালিকা সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশা করছি।