দুঃসময়ের ছড়া – খণ্ড দুই
মহিবুর রহিম ।।
ব্যবসা ভালই জমে
মাছে নাকি আগের মতো
বসে না আর মাছি
সাত দিনেও খাবার নাকি
হয় না এখন বাসি!
আঙ্গুর পেঁপে আপেল কলা
টাটকা বারো মাস
যেমন করে ভাল থাকে
মমির মৃত লাশ!
তিন মাসেও পঁচে না আম
ব্যবসা ভালই জমে
এসব খেয়ে মানুষ গুলোর
আয়ু শুধুই কমে।
উন্নতি
ছিচকে চোরের ভায়রা ভাই
সিঁদেল চোরের খালু
ক্ষমতাসীন দলে থাকে
মাল নাকি খুব চালু
প্রথম দিকে বেঁচেছিলো
মেঘনা নদীর বালু
তারপরেতে টেস্টরিলিফের
আটা চিনি চালও!
যখন হলো ভোট ছাড়া পাস
নতুন চেয়ারম্যান
সব কিছুতে নিজের ভাগের
অফার নাকি দেন!
এমনি করে উন্নতি তার
হচ্ছে দেন আর দেন
নিজের স্বার্থ কড়ায়গন্ডায়
উসুল করে নেন!
ডুবলো হাড়িকুড়ি
বলছে সবাই ঝড়ের কথা
তুলছি না তো কানে
হুক্কাহুয়ার দল যে আছে
আমার বামে-ডানে।
ছয় পেরিয়ে গেলো যখন
ঝড়ের পূর্বাভাষ
আশঙ্কা আর উত্তেজনায়
বাড়লো নাভিশ্বাস।
যদিও বিপদ সংকেতে
কাঁপছে সারাদেশ
আগের মতোই চাটার দলে
বলছিলো- বেশ বেশ।
যখন ঝড়ে ডুবলো তরী
ডুবল হাঁড়িকুড়ি
চিহ্নও সব মিলিয়ে গেলো
রইল না ভুরভুরি।
জানার জন্য
সবাই এখন শিখাতে চায়
শিখতে যে কেউ চায় না,
জানার খাতা মেলে ধরি
উৎসাহী লোক পাই না।
অন্যকে দেয় হিতোপদেশ
নিজেই যা সে মানছে না,
জানার ছিল অনেক কিছু
কিঞ্চিতও সে জানছে না!
এমন গুরুর সংখ্যা অনেক
শিষ্যদেরই আকাল যে,
বাইরে অনেক পন্ডিতি ভাব
ভিতরে তার মাকাল যে!
জ্ঞান ছাড়া কি গুরু হওয়া
কোন ভাবে যায় রে?
জানার জন্য পড়াশোনার
বিকল্প যে নাই রে।
মহতের গল্প
এ জগতে উপকারী মন যার
তার মনে থাকে কিছু হাহাকার
কারণটা কৃতজ্ঞ নয় কেউ
তারপরও মনে দাগা দেয় কেউ!
শত লোক করে যদি ক্ষতি তার
উপকারী টানে না তাও যতি তার!
এ জগতে মহতেরা অল্প
টিকে থাকে তাহাদেরই গল্প
কৃতঘ্ন মিশে যায় ধূলিতে
বদনাম থাকে তার ঝুলিতে
উপকারী মানুষের বড় মন
হয়তো বা নেই তার বহু ধন
মহতের স্বীকৃতি সেই পায়
ভাল কাজ করে যার দিন যায়
মানুষের ক্ষতি তারা করে না
কোন দিন ন্যায় থেকে নড়ে না
মহতেরা শত দুখ সয়ে যায়
তারপরও অকপট রয়ে যায়।