ইতিবাচক ব্যক্তিত্বের উপাদান

সা’দুল্লাহ খান ।।

সামাজিক সত্তা হিসেবে আমাদের সাফল্যের মান নির্ভর করে পরিচর্যার চুম্বকতুল্য শক্তির বিকাশ এবং তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পন্থায় আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সে পরিচর্যার প্রতিফলনের ওপর। পন্থা তিনটি হলো- ক) ইতিবাচক মনোভাব খ) সুচিন্তিত কথা গ) যথাযথ আচরণ।
ব্যক্তিত্ব গঠনের পরিকল্পনা
আমাদের পছন্দ-অপছন্দ, ওয়াদা-অঙ্গীকার আর এসবের ভিত্তিস্বরূপ যে মূল্যবোধ, এগুলো আমাদের জীবনকে নিয়মিতভাবেই বিশেষ রূপ দিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে বলা যেতে পারে, আমাদের জীবন এমন সব চিত্রকর্মের মতো যেগুলো আঁকার কাজটা এগিয়ে চলেছে।
আমরা আমাদের পোশাক-আশাকের ডিজাইনের ওপর জোর দিয়ে থাকি। কিন্তু নিজেদের ব্যক্তিত্বের ডিজাইন বা পরিকল্পনা করাকে কি গুরুত্ব দিই? আমরা জীবনের উপকরণের প্রতি নিষ্ক্রিয় মনোভাব দেখাতে পারি। তাহলে যাপিত জীবনে আমরা হবো ক্ষতির শিকার। অথবা জীবনের উপকরণকে আমরা পারি সৃজনশীলতার সাথে ব্যবহার করতে। তা হলে আমরা নিজ নিজ জীবনের স্থপতি বা নির্মাতা হতে পারব; নিজের ভাগ্য গড়ায় অংশ নিতে এবং সত্যিকার ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
ব্যক্তিত্ব, চরিত্র ও খ্যাতি
ব্যক্তিত্ব হচ্ছে সেসব চিন্তা, আবেগ ও কর্মের সমাহার যেগুলো প্রত্যেক ব্যক্তিকে স্বকীয়তা প্রদান করে।
* খ্যাতি হলো, আপনার ব্যাপারে অন্যরা যা বিশ্বাস করার জন্য আপনি তাদের উদ্বুদ্ধ করে থাকেন। আর চরিত্র হচ্ছে আসলেই আপনি যা, সেটাই।
* আপনার নাম ও ইমেজের সম্মিলনে খ্যাতি প্রতিফলিত হয়। আর চরিত্র হলো আপনার সত্তার সারবস্তু।
* খ্যাতিকে মোড়ক এবং চরিত্রকে তা দিয়ে মোড়ানো বস্তুর সাথে তুলনা করা যায়।
* খ্যাতি বাহ্যিক প্রতিফলন মাত্র; চরিত্র হচ্ছে অভ্যন্তরে অবস্থিত প্রকৃত স্বরূপ।
* এক মুহূর্তেও খ্যাতি তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু চরিত্র গড়ে উঠতে জীবনকাল ব্যয় করতে হয়।
মানুষ আপনার সমাধি ফলকে আপনার সম্পর্কে যা লিখে, তাতে খ্যাতি প্রতিফলিত হতে পারে। অন্য দিকে ফেরেশতারা আপনার সম্পর্কে সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালার কাছে যে রিপোর্ট দেয়, সেটাই চরিত্র।
জীবনপথে চলার কৌশল
১. জীবনে চলার পথে ঘটনাবলির শিকারে পর্যবসিত যেন না হন। বরং আপনাকে হতে হবে জীবনপথের স্থপতি। ঘটনা সংঘটনের জন্য যথাসাধ্য ভূমিকা রাখুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই সতর্কবাণী নিয়ে চিন্তাভাবনা করুন, তোমার কাজ যেমন হবে, পুরস্কার পাবে সে অনুযায়ী (আল-আলবানী কর্তৃক সত্যায়িত)।
২. ‘আমার করা উচিত, আমি করতে পারতাম, আমি করব, অবশ্যই করব’, এসব বলে যারা শেষ পর্যন্ত কাজটা করে না, তাদের মতো হবেন না।
৩. মানুষের জীবনে রোলার কোস্টারের মতো উত্থান-পতন থাকবেই। এটা উপলব্ধি করে ইতিবাচক ভাবনাকে গ্রহণ করতে হবে, নেতিবাচক নয়।
মনে রাখবেন আরবি ভাষার কবি আল মুতানাব্বীর কবিতার পঙক্তি : ‘রুগ্ন মানুষের কাছে সুমিষ্ট পানিও লাগে তিক্ত-বিষাদ;/এ জন্য পানি নয়, তার রোগই দায়ী।’
৪. ইতিবাচক ভাবনা যাদের, তারা জয়ী হওয়ার মনোভাব পোষণ করে থাকেন। তারা নিজেদের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন এবং জোর দেন তাদের শক্তি-সামর্থ্যরে ওপর।
৫. আপনার অনন্য হয়ে ওঠার কৌশল নিজেকে চমৎকারভাবে তুলে ধরা নয়; বরঞ্চ কী করছেন এবং কিভাবে করছেন, এসবই সে ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি হলেন একমাত্র ‘আপনি’। অর্থাৎ আপনি ছাড়া আর কেউ আপনার মন দিয়ে ভাবতে পারে না, আপনার কণ্ঠ দিয়ে পারে না কথা বলতে, অন্য কেউ আপনার চেহারা দিয়ে হাসতে পারে না, আপনার অশ্রু দিয়ে পারে না কাঁদতে কিংবা আপনার দেহটা ধারণ করতে সক্ষম হয় না। আপনি বলতে কেবল আপনিই। অতএব, আপনাকে হতে হবে সর্বোত্তম ‘আপনি’, বা অনন্য এক ব্যক্তিত্ব। আপনার নিজের কাজের জন্য আপনিই দায়ী হবেন আর যে জন্য সাধনা সংগ্রাম চালিয়ে যান, সেটা পাবেন কেবল আপনিই।
৬. জীবনের নানা সমস্যার সমাধান নির্ভর করে সমস্যাগুলোর প্রতি আপনার মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গির ওপর। ইতিবাচক পন্থায় ভাবুন। আমরা কোন দৃষ্টিতে দেখছি, প্রায় সময়ে তার ওপর সমস্যার মাত্রা নির্ভরশীল। হতাশা হলো মন্দ চরিত্রের অংশ।
৭. ব্যর্থতা না মেনে সঙ্কটের মোকাবেলা করুন। পরাজিত হয়েছেন- এটা উপলব্ধি না করে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হোন। নিজের ভুলকে চিহ্নিত করুন; তবে ভুলের পুনরাবৃত্তি করবেন না। হতাশাব্যঞ্জক অবস্থায় পড়লেও উৎসাহ হারাবেন না। অতএব, জীবন যখন আপনাকে লেবু পরিবেশন করে, টক জিনিস দেখে মেজাজ খারাপ করবেন না যেন। বরং সে লেবু দিয়ে শরবত বানিয়ে ফেলুন।
৮. বলার কৌশল কথার পরিমাণ কিংবা গলার আওয়াজ নয়, সত্যবাদিতা ও প্রজ্ঞার ওপর নির্ভরশীল। কথা হলো চিন্তা ও আবেগের বহিঃপ্রকাশ। অন্তরটা কতটুকু পরিশীলিত, তার প্রতিফলন ঘটে বক্তব্যে। তাই সতর্কতার সাথে বিবেচনা করুন- অন্যদের সম্পর্কে আপনি কী ধারণা পোষণ করেন, কেন আপনার ধারণা এ রকম এবং অন্যের ব্যাপারে আপনি কী বলেন।
নবী করীম সা: বলেছেন, তোমার অন্তর ন্যায়নিষ্ঠ না হলে তোমার ঈমান মোটেও পরিশুদ্ধ হবে না এবং তোমার অন্তর বিশুদ্ধ হবে না, যে পর্যন্ত না তোমার জিহ্বা নিয়ম মেনে চলে।’
আল্লাহ তায়ালা আল-কুরআনে বলছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর (প্রতি তোমাদের দায়িত্বের) ব্যাপারে সতর্ক হও এবং সত্য কথা বলো। তিনি তোমাদের কাজকর্মকে তোমাদের জন্য সঠিক অবস্থায় পৌঁছাবেন এবং তোমাদের দোষ-ত্রুটি মাফ করে দেবেন (সূরা আল আহযাব ৩৩:৭০)।
৯. দোষ-ত্রুটি খুঁজে পাওয়া সমালোচনার কৌশল হতে পারে না। বরং দোষ-ত্রুটি উপলব্ধি করে সংশোধনের উপায় উদ্ভাবনেই কৌশল নিহিত।
ড. মাইকেল কুক তার ‘কমান্ডিং দি রাইট অ্যান্ড ফরবিডিং দি রং ইন ইসলামিক থট’ (ইসলামি চিন্তাধারায় ন্যায়ের পথে পরিচালনা এবং অন্যায় কাজে নিষেধ) শীর্ষক বইতে বলেছেন, মানুষের অন্যায় কাজ বন্ধ করার প্রয়াস চালাতে আমাদের কোন ধরনের দায়িত্ব পালন করতে হবে? সব সংস্কৃতিতেই এই প্রশ্ন দেখা যায়। তবে খুব গভীরভাবে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে তেমন দেখা যায় না। ইসলামেই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। কারণ, ন্যায়ের আদেশ আর অন্যায় কাজে নিষেধ কুরআনে বর্ণিত একটি মৌলিক নৈতিক বিধান।
১০. অন্যের সংশোধনের লক্ষ্য নিজেকে তার চেয়ে উত্তমরূপে দেখানো নয়। বরং লক্ষ্য হবে, নিজের সর্বোত্তম গুণাবলির মাধ্যমে অন্যকেও এসব গুণ অর্জনে সহায়তা করা। এ জন্য বিশ্বের কল্যাণে আত্মনিয়োগের অঙ্গীকার থাকা চাই।
১১. নিজের মানোন্নয়নে যথাসাধ্য সংগ্রাম-সাধনা চালানোর পেছনে সময় ব্যয় করুন। তা হলে অন্যের সমালোচনার সময় তেমন পাবেন না।
সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলছেন, হে ঈমানদাররা! একটি জনগোষ্ঠী অন্য এক জনগোষ্ঠীকে হেয় করতে দিও না, যারা এদের চেয়ে উত্তম হতে পারে; নারীদের হেয় করতে দিও না ওই সব নারীদের, যারা হতে পারে এদের তুলনায় উত্তম; তোমরা একে অন্যের কুৎসা রটাবে না, কিংবা ডাকনাম ধরে পরস্পরকে করো না অপমান। ঈমান আনার পর লাম্পট্যসূচক নাম মন্দ। আর যারা অনুতপ্ত হয়ে ফিরে না আসে, তারা মন্দ কাজ করে। হে ঈমানদারগণ! অধিক সন্দেহ পরিহার করো; কারণ দেখো, কিছু সন্দেহ অপরাধ। গোয়েন্দাগিরি করো না, কিংবা একের পেছনে অন্যে মন্দ বলো না (আল হুজুরাত ৪৯:১১-১২)।
১২. মতভেদ পোষণের নিয়ম এটা নয় যে, শত্রুভাবাপন্ন ও একগুঁয়ে হতে হবে। বরং মনান্তর ছাড়াই মতান্তর ঘটানোর যোগ্য হতে হবে।
নেপোলিয়ান হিল বলেছেন, যারা সব সময় আপনার সাথে একমত নয়, তাদের ব্যাপারে সহিষ্ণু হতে না শেখা পর্যন্ত; যাদের প্রশংসা করেন না, তাদের প্রতি কিছু সহানুভূতিপূর্ণ কথা বলার অভ্যাস গড়ে না তোলা পর্যন্ত; অন্যের মন্দ দিক নয়, ভালো দিকের প্রতি লক্ষ করার অভ্যাস তৈরি না করা পর্যন্ত আপনি সফল বা সুখী হবেন না।’
১৩. আনন্দিত হওয়ার অর্থ এটা নয় যে, কেবল নিজেই হবেন সুখী। বরং, এর তাৎপর্য হচ্ছে- অন্যদের জীবনেও সুখ এনে নিজের আনন্দ বাড়িয়ে তোলা। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, তোমার কাছের মানুষের দিকে হাসিমুখে তাকানো দান হিসেবে গণ্য (তিরমিযী)।
১৪. অনুপ্রেরণা জোগানো মানে নির্দেশ প্রদান ও হুকুম দেয়া নয়। পরামর্শ জুগিয়ে ও হাতে-কলমে শিখিয়ে প্রেরণা দিতে হয় অপরকে।
আসুন, আমরা এই যুগপ্রাচীন ও প্রজ্ঞাপূর্ণ কবিতাটির বক্তব্য গভীরভাবে ভেবে দেখি- “যেকোনো দিন ভাষণ ‘শোনা’র বদলে একটি ভাষণ ‘দেখব’।/আমাকে শুধু পথ দেখানোই নয়, আমার সাথে আপনি হাঁটবেনও।/কানের চেয়ে চোখ উত্তম শিক্ষার্থী, আগ্রহও তার বেশি।/ দৃষ্টান্ত ছাড়া শুধু শিক্ষাদান জন্ম দিতে পারে বিভ্রান্তির;/কথার মাধ্যমে দেয়া পাঠ হতে পারে চমৎকার সত্য;/ কিন্তু আপনার কথা নয়, কাজ দেখেই আমি পাঠ নিতে চাই।/ আপনার মহৎ উপদেশ পেয়েও ভুল বুঝতে পারি আপনাকে;/ কিন্তু আপনার কাজ ও জীবন দেখে নিলে ভুল বোঝাবুঝি আর থাকে না।”
উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবন মানে এই দুনিয়ায় কোনোমতে সময় পার করে দেয়া নয়। বরং সে জীবন মোমবাতির মতো। মোমবাতি জানে, তার মৃত্যু অনিবার্য। তবু সে সবাইকে আলো বিলিয়েই তিলে তিলে নিঃশেষ হয়।
আমাদের মনে রাখা দরকার-
# জীবনের বাস্তবতা হলো পরিবর্তন।
# জীবনের চ্যালেঞ্জ হলো পরিপূর্ণ জীবনযাপন।
# জীবনের শিক্ষা হলো, এটা অস্থায়ী।
# জীবনের প্রজ্ঞা হলো, অতীত থেকে শিক্ষা নেয়া।
# জীবনের কাজ হলো, ভিন্নতা আনা বা অবস্থা বদলে দেয়া।
মানবজীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইহসান। আল্লাহর ভয়ের ভিত্তিতে যে ন্যায়নিষ্ঠা, সেটাই ইহসান। আল্লাহ তায়ালা সর্বক্ষেত্রে ইহসানের তাগিদ দিয়েছেন। এটা করা হলে আপনি পৃথিবীকে যে অবস্থায় পেয়েছেন, তার চেয়ে উত্তম স্থান হিসেবে রেখে এখান থেকে বিদায় নিতে সক্ষম হবেন।
হজরত মুহাম্মদ সা: বলেছেন, ‘তোমরা যা কিছুই করো না কেন, সব ক্ষেত্রেই ভালো কাজের নির্দেশ আল্লাহ তায়ালা দিয়েছেন।’ মানুষের সম্ভাবনার বিকাশ ও ব্যক্তিত্ব অর্জনের প্রেক্ষাপটে এই বাণী জীবনে নৈপুণ্য ও দক্ষতাকে সবচেয়ে প্রাগ্রসর ও ইতিবাচক পন্থায় ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করবে। এ জন্য মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের স্বার্থে প্রয়োজন :
# দৃঢ় প্রত্যয়সমৃদ্ধ সাহস
# অধ্যবসায়পূর্ণ ধৈর্য
# করুণামিশ্রিত শক্তি
# মর্যাদাসমেত কর্তৃত্ব
# প্রতিশ্রুতিসহ দায়িত্ব
# প্রজ্ঞাসহকারে নীতিনিষ্ঠা
# শৃঙ্খলাশোভিত স্বাধীনতা
# বিনয়ধন্য সম্মানিত অবস্থান
# সহানুভূতিপূর্ণ ন্যায়বিচার
# ভালোবাসার জীবন
আমরা যদি রাসূল মুহাম্মদ সা:-এর উপদেশ মেনে চলি, তাহলে এ সবকিছুই অর্জন করা সম্ভব। হাদিস শরিফে আছে, যে-ই আল্লাহ ও শেষ (বিচারের) দিনে বিশ্বাসী, সে ভালো কথা বলা, নতুবা চুপ করে থাকাই উচিত (আল বুখারি)।
আর আল্লাহ তায়ালার আদেশ- যে কেউ তার প্রভুর সাথে সাক্ষাতের আশা করে, তাকে সৎ কাজ করতে দাও এবং তার প্রভুর জন্য যে উপাসনা করা তার দায়িত্ব, অন্য কাউকে যেন তার শরিক না করে (আল কাহফ ১৮:১১০)।

 

লেখক : সা’দুল্লাহ খান, হাফেজে কুরআন (১৯৬৯)। ইউনিভার্সিটি অব ডারবান- ওয়েস্ট ভিল থেকে আইনে ডিগ্রিধারী। ব্রিটেনে সাংবাদিকতায় উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন। আল আজহার থেকে মাস্টার্স করেছেন ইসলামের উপস্থাপন বিষয়ে এবং তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে। বর্তমানে ইসলামিক সেন্টার অব আরভিনের পরিচালক। যুক্তরাষ্ট্রের একজন মুসলিম দা’ঈ।

ভাষান্তর : মীযানুল করীম

সূত্র : অন্য এক দিগন্ত

 

Similar Posts

error: Content is protected !!