হাওরাঞ্চলে বন্যা : বাঁধ উঁচু করার সুপারিশ


আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

হাওরাঞ্চলে আকষ্মিক বন্যা প্রতিরোধে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডুবে যাবে এমন সব বাঁধ উঁচু করার সুপারিশ করেছে সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে ‘হাওরের জলবায়ু ও ইকোসিস্টেমে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের প্রভাব নিরূপণ ও সমাধানের পন্থা’ শীর্ষক এক জাতীয় প্রচারণামূলক কর্মশালার মূল প্রবন্ধে সিইজিআইএস-এর উপ-নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা এ খান এই সুপারিশ তুলে ধরেন।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বীর প্রতীক কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর-এর মহাপরিচালক মো. মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান, সিইজিআইএস-এর নির্বাহী পরিচালক মো. ওয়াজি উল্লাহ, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: ইউসুফ প্রমুখ বক্তব্য দেন। বাসস

মালিক ফিদা এ খান কর্মশালায় আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে- হাওর এলাকায় কমপক্ষে ১০ বছরের মধ্যে পুনরায় বন্যা হবে তা স্থানীয় জনসাধারণকে মেনে নিতে হবে। এছাড়া নৌ-চলাচল ও পানি প্রবাহ সুষ্ঠুভাবে ধরে রাখার জন্য সুরমা, কালনী, কুশিয়ারা, বাওলায়, কানগা ও ধনু নদী নিয়মিত ড্রেজিং বা খনন করতে হবে। উন্নত কৃষি প্রযুক্তি যেমন- আইপিএম, আইসিএম, জিএপি প্রভৃতি এবং শস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে জৈবসার ব্যবহার উৎসাহিত করতে হবে বলে কর্মশালার মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়।

পানিসম্পদ মন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য পানিই হচ্ছে মূল উপাদান এবং পানি সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনা ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, প্রকৃতির সাথে সহাবস্থানের স্বার্থে বাঁধের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা- তা ভাবার সময় এসেছে।

পানি সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য নদী ড্রেজিংয়ের বিকল্প নেই- উল্লেখ করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী খননের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে বিস্তীর্ণ যমুনা নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৬৫০ বর্গকিলোমিটার জমি উন্নয়ন করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

পানি সম্পদমন্ত্রী বলেন, সিইজিআইএস হাওরে বিদ্যমান অবকাঠামোগুলোর কারণে কৃষি, পানি সম্পদ, মৎস্য, আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে যে প্রভাব পড়েছে, তা নিরুপণ করেছে। এই সমীক্ষার মাধ্যমে হাওর এলাকায় কাঠামোগত উন্নয়ন, পরিবেশ ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কতটা ভূমিকা রেখেছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে নিরুপণ করা সম্ভব হবে।

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বীর প্রতীক বলেন, হাওরের ইকোলজি যাতে কোনক্রমেই নষ্ট না হয় সংশ্লিষ্ট সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে। হাওর অঞ্চলে কোন অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে করতে হবে এবং আন্তঃসমন্বয় জোরদার করতে হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পানি সম্পদ ব্যবস্থানার বিষয়টি মাথায় রেখে নদী ড্রেজিংকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। বড় ও মাঝারি মিলিয়ে ২৪টি নদী ড্রেজিং জরুরি। কিন্তু নদী ড্রেজিং একটি দীর্ঘ ও কঠিন প্রক্রিয়ার বিষয়। সব বিষয় মাথায় রেখে আমরা এজন্যে কাজ করে যাচ্ছি।

Similar Posts

error: Content is protected !!