ইউরোপের বস্তিগুলো : প্রদীপের নিচে অন্ধকার

আমাদের নিকলী ডেস্ক ।।

ইউরোপের শহরগুলোর বস্তিতে তিন কোটিরও বেশি মানুষের বাস। এসব বস্তিতে নেই বিদ্যুৎ ও পানির সুব্যবস্থা।

অমানবিক অবস্থা
বেশিরভাগ বস্তিতে এক ছাদের নিচে অনেকে বাস করেন। মাত্র চার বর্গমিটার এলাকায় তিনজন মানুষ গাদাগাদি করে থাকে। নেই বিশুদ্ধ পানি, শৌচাগার বা নিরাপত্তা।

প্যারিসের অন্য রূপ
ইউরোপের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নাম রোমা। অভিজাত শহর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের উপকণ্ঠে একটি বস্তির ছবি এটি। ইউরোপের বিভিন্ন শহরের বস্তিতে রোমাদের সংখ্যাটাই বেশি। এদের বেশিরভাগই শিক্ষা থেকে বঞ্চিত এবং বেকার।

ঘর হারানোর ভয়
আমাদের দেশের মতোই বেশিরভাগ বস্তি অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে। তবে প্রধান শহরগুলোতে কিছু বস্তি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত। রোমারা এসব বস্তিতে খুব আশঙ্কার মধ্যে থাকে, কেননা তারা শ্রেণি বৈষ্যমের শিকার এবং যে-কোনো সময় তাদের বের করে দেয়ার ভয় দেখানো হয়।

প্রদীপের নীচে অন্ধকার
ইউরোপকে সবসময় ধন-সম্পদে পরিপূর্ণ এবং জীবনযাপনের জন্য ভালো স্থান বলে তুলে ধরা হয়। কিন্তু ফ্রান্স থেকে সার্বিয়া বা তুরস্ক সব জায়গাতেই কিন্তু বস্তি রয়েছে। ইউরোপের সবচেয়ে বড় বস্তিটি স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের কাছে অবস্থিত। ৪০ বছর আগে গড়ে ওঠা এই বস্তিতে বাস করেন প্রায় ৩০,০০০ মানুষ।

বস্তিতে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা
জাতিসংঘের মতে, ২০২০ সালের মধ্যে সাহারা অধ্যুষিত আফ্রিকায় মোট জনসংখ্যার ২৬.৬ শতাংশ বস্তিতে বাস করবে, যা বর্তমানের চেয়ে একটু বেশি। এশিয়ার মোট জনসংখ্যার ৫৭.৭ শতাংশ মানুষ বস্তিতে বাস করবে। সেই তুলনায় ইউরোপের দেশগুলোতে মোট জনসংখ্যার মাত্র ২.৩ শতাংশ মানুষ থাকবে বস্তিতে।

বৃত্ত থেকে বের হওয়ার উপায় নেই
বিশ্বের অন্যান্য বস্তির তুলনায় ইউরোপের বস্তিগুলোর মানুষ অবশ্য সুযোগ সুবিধা থেকে ততটা বঞ্চিত নয়। তবে বিশ্বের সব বস্তিতে একটা বিষয়ে মিল আছে আর তা হলো শিক্ষার আলো থেকে বস্তিবাসীরা বঞ্চিত। ফলে এরা কেউ এই দরিদ্রতা থেকে বেরিতে আসতে পারে না।

কণ্টকিত জীবন
ইউরোপের বস্তিগুলো কেবল রোমা সম্প্রদায় নয় অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মাথা গোঁজার জায়গা। বিশেষ করে স্পেনে অর্থনৈতিক মন্দার পর অনেকেই বাসা ভাড়া এবং বাড়ি বন্ধকীর অর্থ শোধ করতে না পারায় বস্তিতে ঠাঁই নিয়েছেন।

গৃহহীন
ইটালির রাজধানী রোমের উপকণ্ঠে একটি শরণার্থী শিবিরে এই পরিবারটির বাস। আসলে একটা বস্তির আকার ও আয়তন কি হবে তা পরিমাপ করাটা কঠিন। তবে বরাবরই কর্তৃপক্ষ যা ঘোষণা করে তার চেয়ে বস্তিবাসী মানুষের সংখ্যা বেশি হয়ে থাকে।

সূত্র : ইউরোপের বস্তিগুলো  [ডয়চে ভেলে, ২২ অক্টোবর ২০১৪]

Similar Posts

error: Content is protected !!