নিকলীতে শাখা ব্যবস্থাপকের হাতে সমিতির পরিচালক খুন

খাইরুল মোমেন স্বপন, বিশেষ প্রতিনিধি ।।

কিশোরগঞ্জের নিকলীতে রঙধনু সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের শাখা ব্যবস্থাপকের হাতে পরিচালক খুন হয়েছেন। সংস্থাটির পরিচালক সুলতান উদ্দিনের (৫২) বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠিয়েছে নিকলী পুলিশ। তিনি উপজেলার গুরই ইউনিয়নের বানিয়াহাটি গ্রামের মৃত সাহেব আলীর ছেলে। ঘটনার পর থেকে ঘাতক শাখা ব্যবস্থাপক ছাতিরচর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর পুত্র হিযবুল্লাহ (২৮) ও তার মামাতো ভাই একই গ্রামের আ. কাদিরের পুত্র ইসরাফিল (২৫) পলাতক রয়েছেন।

জানা যায়, নিহত সুলতান উদ্দিন প্রশিকা মানবিক ও উন্নয়ন সংস্থার একজন সাবেক কর্মি। সংস্থাটির দুর্দিন চলায় কয়েক বছর আগে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। রঙধনু সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামে একটি স্থানীয় সংগঠন পরিচালনা শুরু করেন। এনজিওর ঋণ কার্যক্রম অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অল্প দিনের মধ্যেই সফলতা অর্জন করেন।

নিকলী উপজেলার সীমান্ত এলাকা হিলচিয়া বাজার, গুরই বাজার ও ছাতিরচর বিজয় নগরে ৩টি কার্যালয় স্থাপন করেন। গত রোববার হাওর ঘেরা ছাতিরচর ইউনিয়ন কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক হিযবুল্লাহর চাহিদাপত্রের ঋণ দেয়ার পরিকল্পনা অনুযায়ী সুলতান উদ্দিন ৪ লাখ টাকা নিয়ে সকাল ১০টায় হিলচিয়া কার্যালয় থেকে ছাতিরচরে যান। বরাবরের মতো সন্ধ্যার মধ্যে বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও রাত ১০টা অবধি সুলতান উদ্দিন না ফেরায় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। একই সাথে হিযবুল্লাহর মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ দেখানোয় সুলতানের পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হয়।

রাতেই অপর একটি একই প্রকৃতির সমিতির পরিচালক ও প্রতিবেশি ফজলুর রহমানকে বিষয়টি জানানো হয়। ফজলুর রহমান গুরই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহের, সাবেক চেয়ারম্যান ফয়জুর রহমানসহ কয়েকজনকে নিয়ে রাতেই ছাতিরচর পৌঁছেন। সেখানে কারও কাছে সুলতান বা হিযবুল্লাহর খবর না পেয়ে বিজয় নগরের সমিতির শাখা কার্যালয়ে যান। কার্যালয়টি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দেখতে পান। সন্দেহ নিরসনে তালা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে তারা এলোমেলো আসবাবপত্র দেখতে পান। সন্দেহ ঘনীভূত হলে একটি চৌকির নীচ হতে সুলতানের গলায় গামছা প্যাঁচানো বস্তাবন্দি লাশ দেখতে পান। লাশের সাথে ইট পাথর দেয়া ছিলো। রাতেই নিকলী থানা পুলিশকে জানালে রাতেই সুলতানের লাশ উদ্ধার করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসি জানান, গভীর রাতে লাশ নদীতে ফেলে দেয়ার পরিকল্পনা ছিলো বলে মনে হয়।

তারা আরও জানান, বিকাল থেকেই হিযবুল্লাহ ও তার মামাতো ভাই ইসরাফিলকে কিছুটা বিধ্বস্ত ও ব্যস্ত দেখা গেছে। বৈশাখির ধান তোলায় ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি গুরুত্বের নজরে আসেনি কারও।

নিকলী থানা পুলিশ ইনচার্জ মো. নাসির উদ্দিন ভূইয়া জানান, নিহতের ভাতিজা বাদি হয়ে হিযবুল্লাহ সহ ৫জন ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজন উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিদের ধরতে চেষ্টা চলছে।

Similar Posts

error: Content is protected !!